রমণী বিশ্বাস, তেহট্ট: করোনা যুদ্ধে শামিল গোটা দেশ। ভাইরাসকে পরাজিত করার একমাত্র উপায় লকডাউন। তাই গৃহবন্দি প্রায় সকলেই। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর কথা ভেবে ২০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরি করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই তহবিলে অর্থ সাহায্য করেছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে সাধারণ মানুষ প্রায় সকলেই। এবার সেখানেই সামর্থ্য মতো আর্থিক সাহায্য করে মানবতার পরিচয় দিল তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া দুই পড়ুয়া।
নদিয়ার তেহট্ট থানার বেতাই আখড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা অঙ্কন এবং অন্বেষা বিশ্বাস। দুজনে সম্পর্কে ভাইবোন। অন্বেষা বেতাই সিভিলগঞ্জ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং অঙ্কন পড়ে বেতাই সিদ্ধেশ্বরী বিদ্যাপীঠে। তারা প্রত্যেকেই তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ওই ছাত্রছাত্রীদের হাতে কেউ টাকা দিলে একটি ভাঁড়ে তা জমিয়ে রাখত। বাড়ি থেকে শেখানো হত বিপদের সময় হয়তো এই টাকা কাজে লাগবে। সেই অনুযায়ী লকডাউনের সময়ে আচমকাই ভাঁড় ভেঙে ফেলে তারা। অন্বেষা ৯৫৭ টাকা এবং অঙ্কন ৯৮৮ টাকা জমিয়েছিল। দুজনেই পরিজনদের জানায়, এই টাকা মুখ্যমন্ত্রীর করোনা ত্রাণ তহবিলে জমা দিতে চায় তারা।
[আরও পড়ুন: দিনমজুরি বন্ধ, লকডাউনে রোজগারের বিকল্প রাস্তার ধারে সবজি বিক্রি]
ওই দুই খুদে পড়ুয়ার বাবা অশোক বিশ্বাস বলেন, “করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে দেশে লকডাউন জারি রয়েছে। তাই বাড়িতেই আছি। বাচ্চারা স্কুলেও যাচ্ছে না। সংবাদপত্র কিংবা সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে করোনা ত্রাণ তহবিলের কথা শুনেছে অঙ্কন এবং অন্বেষা। তারপরই ভাঁড় ভেঙে ফেলে তারা। প্রায় ২ হাজার টাকা করোনা তহবিলে জমা দিতে চায় বলেই জানায়।” ছেলেমেয়ের কথা শুনে প্রশাসনিক আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন অঙ্কন-অন্বেষার বাবা। আধিকারিকদের পরামর্শ অনুযায়ী ওই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে অ্যাকাউন্টে জমা করেছেন তিনি।
তেহট্টের মহকুমা শাসক অনীশ দাশগুপ্ত শিশুদের উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “শিশুরাও যে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝবে এভাবে এগিয়ে আসতে পারে, তা আগে বুঝিনি। অত্যন্ত খুশি আমরা।” খুদে দুই পড়ুয়ার আর্থিক সাহায্যের পরিমাণ অঙ্কের হিসাবে কম। তবে তাদের উদ্যোগ আর পাঁচটা মানুষের চোখ খুলে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট বলেই মনে করছেন অনেকে।
The post করোনা মোকাবিলায় শামিল, ভাঁড় ভেঙে মুখ্যমন্ত্রীর তহবিলে আর্থিক সাহায্য ভাইবোনের appeared first on Sangbad Pratidin.