সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ২ মাস ধরে বাহরাইচের অন্তত ৩৫ গ্রামে ত্রাস হয়ে উঠেছে নরখাদক নেকড়ের দল। এই দলের ছয়টি নেকড়ের মধ্যে ধরা পড়েছে ৫টি। শেষ নেকড়েকে ধরতে জারি রয়েছে অভিযান। এরই মাঝে ফের নেকড়ের হানা বাহরাইচে। বুধবার ভোররাতে আরও দুই শিশুর উপর আক্রমণ চালাল নরখাদক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত ১২টা নাগাদ গাদারিয়ান পূর্ব গ্রামে ১১ বছরের এক বালিকার ঘাড় কামড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে নেকড়েটি। ঘরের ভিতর থেকে বের করে পাশের মাঠ পর্যন্ত নিয়ে চলে যায়। বালিকার চিৎকারে জেগে ওঠে বাড়ির লোক। এর পর শিকার ছেড়ে পালিয়ে যায় নেকড়েটি। গুরুতর আহত অবস্থায় তড়িঘড়ি ওই বালিকাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। এর পর দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে ভোর ৪টে নাগাদ। শিবানী নামে বছর এগারোর এক বালিকা। দরজাবিহীন কুঁড়েঘরে ঢুকে একইভাবে ঘাড় কামড়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে নেকড়ে। বাড়ির লোকজন জেগে উঠলে পালিয়ে যায় সে।
[আরও পড়ুন: কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের সমর্থক, 'ভারত বিরোধী' সেই মার্কিন আইনপ্রণেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ রাহুলের]
গত ২ মাস ধরে উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলায় আতঙ্কের অপর নাম হয়ে উঠেছিল নেকড়ের দল। রাতের অন্ধকারে নরখাদকের হামলায় ইতিমধ্যেই প্রাণ গিয়েছে ১০ জনের। যার মধ্যে ৯ জনই শিশু। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরও ৩৬ জন। এই পরিস্থিতিতে দলের ৬ সদস্যের মধ্যে খাঁচা পেতে ৪টি নেকড়েকে ধরা হলেও বাকি দুই নেকড়ের হানায় প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়েছিল এলাকাবাসীর। মঙ্গলবার ঘাঘরা নদীর কাছে হরবক্ষ পুরওয়া গ্রামে খাঁচা পেতে নরখাদক দলের পঞ্চম নেকড়েকে আটক করেন বনকর্মীরা। তবে এখনও খোলা ঘুরে বেড়াচ্ছে দলের শেষ সদস্য। সঙ্গীদের হারিয়ে সেটাই বেপরোয়া ভাবে আক্রমণ চালাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে বিপাকে ফারুক আবদুল্লা! দুর্নীতি মামলায় নয়া অভিযোগে আদালতে ইডি]
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে যায় যে সরকারের তরফে নেকড়ে দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লাঠি হাতে পাহারায় নামেন এলাকাবাসী। তাতেও অবশ্য আক্রমণ থামানো যায়নি। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর আকার নিয়েছে যে নেকড়ে হামলার ঘটনায় উদ্বিগ্ন উত্তরপ্রদেশে সরকার রাজ্যে 'বন্যপ্রাণ বিপর্যয়' ঘোষণা করেছে। শেষ নেকড়েকে পাকড়াও না করা পর্যন্ত বাহরাইচে জারি থাকছে ‘অপারেশন ভেড়িয়া’। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, মানুষখেকো নেকড়ে ধরতে ২৫টি দল গঠন করার পাশাপাশি নিযুক্ত করা হয়েছে ১৮ জন শার্পশুটার। ফলে খাঁচা পাতার পাশাপাশি বন্দুক হাতে চলছে নেকড়ে ধরার অভিযান।