ধীমান রায়, কাটোয়া: পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় পাঁচ বন্ধু মিলে গঙ্গাস্নান করতে নেমেছিল। স্নানের মাঝে ছবি তুলতে তুলতেই তলিয়ে গেল দুই পড়ুয়া। সোমবার দুপুর দুটো নাগাদ ঘটেছে ঘটনাটি। খবর পেয়ে নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা।
জানা গিয়েছে, নিখোঁজ দুই ছাত্রের নাম অভিষেক সিং (১৭) ও দীপঙ্কর মুখোপাধ্যায় (১৭)। এদের মধ্যে অভিষেক কাটোয়ার বিআইটি কলেজের ছাত্র। দীপঙ্কর বর্ধমান শহরে একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। দুজনেরই বাড়ি বর্ধমান শহরে। কাটোয়া বিআইটি কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া বর্ধমান শহরের বাসিন্দা জিৎ ভৌমিক, খণ্ডঘোষ থানা এলাকার বাসিন্দা সত্যম ঘোষ, বর্ধমানের সরঙ্গা এলাকার বাসিন্দা সৌম্যদীপ ধাড়া-এরা সকলেই কাটোয়া বিআইটি কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র। তাদের সঙ্গেই পড়ে বর্ধমান শহরের বাদশাহি রোড এলাকার বাসিন্দা অভিষেক। কলেজে এখন পুজোর ছুটি চলছে। চার বন্ধু মিলে এদিন বাড়ি থেকে কলেজে আসে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। বাড়িতে না জানিয়েই তাদের সঙ্গে যায় দীপঙ্কর।
[আরও পড়ুন: বিরাটের সেঞ্চুরির কৃতিত্ব মোদির! সি ভি আনন্দ বোসকে বিঁধে পালটা খোঁচা সাকেত গোখলের]
কলেজের কাজ মিটিয়ে বাড়ি ফেরার কথা। কিন্তু হঠাৎ পাঁচ বন্ধু ঠিক করে তারা কাটোয়া শহরে গিয়ে গঙ্গাস্নান করে বাড়ি ফিরবে। সেইমতো দুপুর প্রায় দুটো নাগাদ তারা কাটোয়ার দেবরাজ ঘাটে স্নান করতে যায়। জানা গিয়েছে, প্রথমে চারজন জলে নামে। জিৎ ভয়ে নামেনি। জলে নামার পর সৌম্যদীপও উঠে চলে আসে। তিনজন ছিল। তারা মজা করেই স্নান করছিল। নদীতে ভেসে যাওয়া কচুরিপানা মাথায় নিয়ে তাদের ফটোশ্যুট করতেও দেখেন কয়েকজন। তারপর হঠাৎ তলিয়ে যেতে থাকে অভিষেক ও দীপঙ্কর। সত্যম জানায়, সে কয়েকহাত দুরে ছিল। দুই বন্ধুকে তলিয়ে যেতে দেখে তাদের দিকে গামছা ছুড়ে দেয়। কিন্তু ধরতে পারেনি। সত্যম কোনওরকমে ওঠে।
ঘটনার সময় দেবরাজ ঘাটের কাছে তেমন লোকজন ছিল না। দুই চারজন পুন্যার্থী স্নান সেরে পাড়ে বসে মুড়ি খাচ্ছিলেন। খবর পেয়েই তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। প্রত্যক্ষ্যদর্শী প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, “ওই ছেলেগুলোকে আগেই নিষেধ করেছিলাম যাতে বেশি জলে না নামে। কোমরজল পেড়িয়ে যেতেই চোরাস্রোতের টানে তলিয়ে যায়। আমরা কাছে যেতে যেতেই দুজনই তলিয়ে যায়।” উল্লেখ্য, মহালয়ার পুন্যস্নানের আগেই কাটোয়ার স্নানঘাটগুলিতে বিশেষ সতর্কতা নিয়েছিল পুলিশ ও পুরসভা। তখন থেকেই ঘাটগুলিতে নদীর বিপজ্জনক অংশগুলি চিহ্নিত করে বোর্ড লাগিয়ে দেওয়া হয়। দেবরাজ ঘাটের কাছেও দেওয়া ছিল সতর্ক বার্তা।