সুকুমার সরকার, ঢাকা: মুজিববর্ষে আরও এক পালক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুকুটে। এবার রাষ্ট্রসংঘের তালিকায় স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তকমা পেল বাংলাদেশ (Bangladesh)। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের ‘কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি’র (CDP) অন্যতম শীর্ষকর্তা তাফেরে তেসফাচিউ।
[আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কারাগরে রহস্যমৃত্যু লেখকের, প্রতিবাদে উত্তাল ঢাকা]
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই স্বীকৃতির কৃতিত্ব জনগণকে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। এই বিষয়ে তিনি বলেন, “২০২৪ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করবে। এই মান ধরে রাখাটাই চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জগুলি কীভাবে মোকাবিলা করতে পারি, আমরা সেই প্রস্তুতি নিচ্ছি। ২০২৪ সাল থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রয়োজনীয় সূচকগুলো ধরে রাখতে হবে। আর সেই চ্যালেঞ্জ নিতে যা যা করা দরকার, আমি করতে প্রস্তুত।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই বাংলাদেশে এমন মানুষ ছিলেন, যাঁদের কোনও আশা-ভরসা ছিল না। হাত পেতে চলতে হত। তাঁদের জন্য আমরা ঠিকানার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। মুজিববর্ষে এটিই সবচেয়ে বড় কাজ। ওই ঠিকানাই তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করবে।”
২০১৮ সালেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় পৌঁছনোর উপযোগী বলে ঘোষণা করেছিল কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি। রাষ্ট্রসংঘের নিয়ম অনুযায়ী, পরের তিন বছর মাথাপিছু আয়, অর্থনৈতিক উন্নতি, পরিবেশ ইত্যাদির নিরিখে উন্নয়নের একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড ধরে রাখতে পারলে তবেই চূড়ান্ত সুপারিশ করে সিডিপি। গত শুক্রবার সেই সুপারিশ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনে একটি দেশের মাথাপিছু আয় হতে হয় কমপক্ষে ১ হাজার ২৩০ ডলার। ২০২০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ১ হাজার ৮২৭ ডলার।
এদিকে, উন্নয়নশীল দেশের তকমার ফলে সুবিধা যেমন হবে তেমনই কিছু অসুবিধাও রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে এতদিন রপ্তানি ও পরিবেশ দূষণ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আইন থেকে কিছুটা ছাড় ও আর্থিক অনুদান পেত বাংলাদেশ। এবার থেকে আর সেটা পাওয়া যাবে না। তবে উন্নয়নশীল দেশের তকমা পাওয়া বাংলাদেশের ক্রেডিট রেটিং বাড়বে। এর ফলে বিদেশি লগ্নিকারীদের আস্থাও বাড়বে। দেশটিতে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হবে। সব মিলিয়ে দ্রুত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে দেশ।