স্টাফ রিপোর্টার: প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বর্তমান ঠিকানা এখন প্রেসিডেন্সি জেলের পয়লা বাইশ ওয়ার্ডের ২ নম্বর সেল। ২৪ ঘণ্টার জন্য সিসি ক্যামেরায় নজরবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)। রবিবারই তাঁর সেলের সামনে বসেছে সিসি ক্যামেরা। যার লিংক থাকছে সরাসরি জেল সুপার ও ডিউটি অফিসারদের ঘরে। জেলে কেমন আছেন প্রাক্তন মন্ত্রী, সিসিটিভি ফুটেজ থেকেই জানা যাচ্ছে তা।
রবিবার সকালেই প্রথম স্নান করেছেন পার্থ। তাঁর সেলের বাইরেই জলভরা একটি ড্রাম রাখা হয়। তা থেকে মগে করে জল নিয়ে নিজেই মাথায় ঢেলে স্নান সারেন। গা-হাত মোছার একটি কাপড়ও দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, জেলে ঢোকার পর থেকেই পা ফুলছে পার্থর। ব্যথা রয়েছে কোমরেও। ফলে কয়েদিদের জন্য় বরাদ্দ স্নানের জায়গায় যেতে পারেননি তিনি। সেলের বাইরে কোনওরকমে স্নান সেরেছেন।
[আরও পড়ুন: খুন নাকি আত্মহত্যা? লেকটাউনে শ্বশুরবাড়ি থেকে বধূর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারে চাঞ্চল্য]
সকালে অন্যদিনের মতো চা-পাউরুটিই খেয়েছেন। দুপুরে ডাল-ভাত-সবজি খেয়েছেন পার্থ। সঙ্গে আবেদন রেখেছেন, রাতেও তাঁকে যেন ভাতই দেওয়া হয়। রাতে তাঁকে রুটি দেওয়া হচ্ছিল। তাঁর আবেদনের পর তাতে সাড়া মিলেছে জেল কর্তৃপক্ষের। ফলে রাতেও তাঁকে ভাতই দেওয়া হয়। অবসর সময় ঘুমিয়েই কাটাচ্ছেন পার্থবাবু। রক্ষীরাও সেই রিপোর্টই দিয়েছেন।
একদিন আগেই চিকিৎসকের কাছে তিনি আবেদন করেছিলেন একটি খাটের। চিকিৎসককে জানান, একেবারে মেঝেয় তিনি বসতে পারেন না। একবার কষ্ট করে বসে পড়লে উঠতেও পারেন না। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে শেষমেশ চিকিৎসক তাঁর জন্য খাটের সুপারিশ করেন। জেল কোডের সমস্ত দিক বিবেচনা করে মানবিক কারণে পার্থবাবুকে তাঁর আবেদনমতো খাটটি দেওয়াও হয়। তাতে তাঁর বসার বেশ সুবিধা হয়েছে। সেই খাটেই এদিন দিনভর তাঁকে ঘুমোতে দেখা গিয়েছে। শুধু ঘুম নয়, বেশ ভাল ঘুম হচ্ছে তাঁর। দুপুরেও ঘুমিয়েছেন। বিকেলেও ঘুমিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: আধুনিক যুগের ‘সহমরণ’! শোকে স্বামীর চিতার কাছেই গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী স্ত্রী]
অন্যদিকে, কিছু দূরেই আলিপুর মহিলা জেলের সেলে এদিনও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের (Arpita Mukherjee) অবস্থার বিশেষ কোনও উন্নতি হয়নি। খাওয়াদাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক হলেও ঘুম একেবারেই হচ্ছে না। অর্পিতা বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন বলে আলিপুর মহিলা জেল সূত্রের খবর। তার মধ্যে মাঝেমাঝেই কান্নাকাটি করছেন। বারবার আক্ষেপের সুরে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘আমাকে ব্যবহার করা হল। আমি বিশ্বাস করে ফেঁসে গেলাম।’
উলটোদিকে পার্থবাবু দফায় দফায় ঘুমোচ্ছেন। সূত্রের খবর, ঘুম থেকে উঠে তিনি খাওয়াদাওয়া করছেন। খেয়েই আবার ঘুমিয়ে পড়ছেন। এইভাবেই চলছে। এখনও পর্যন্ত পার্থবাবুর বাড়ি থেকে কেউ তাঁকে দেখতে আসেননি। কিন্তু ঘনিষ্ঠমহল বলছে, তাঁর দাদা যে কোনওদিন দেখা করতে যেতে পারেন।