shono
Advertisement

Breaking News

দুর্নীতির বিপুল টাকা কোথায় লুকোলেন মানিক? ৩০টি অ্যাকাউন্টে হন্যে হয়ে খুঁজছে ইডি

মানিকের দুর্নীতি আড়াইশো কোটি টাকা ছাপিয়ে যেতে পারে, দাবি ইডি সূত্রের।
Posted: 08:41 PM Oct 26, 2022Updated: 08:41 PM Oct 26, 2022

অর্ণব আইচ: মানিক ভট্টাচার্যের বিপুল টাকার হদিশ পেতে তদন্ত এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ED)। এখনও পর্যন্ত টেট দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিকের স্ত্রী ও ছেলের ব্যাংক অ‌্যাকাউন্টে প্রায় দশ কোটি টাকার হদিশ মিলেছে। কিন্তু মানিকের (Manik Bhattacharya) আরও প্রায় ৩০টি ব্যাংক অ‌্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছেন ইডির গোয়েন্দারা। গোয়েন্দাদের মতে, এখনও পর্যন্ত মানিক ভট্টাচার্যর যত টাকার দুর্নীতি সামনে এসেছে, তা হিসাব করলে আড়াইশো কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাওয়া উচিৎ।

Advertisement

এবার ইডির প্রশ্ন, মানিক এই বিপুল টাকা কোথায় সরিয়েছেন? কোথায় লগ্নি হয়েছে ওই টাকা? কিছু ব‌্যবসায় টেট দুর্নীতির টাকা লগ্নি করা হয়েছে বলেই সন্দেহ গোয়েন্দাদের। এই ব‌্যাপারে আরও তথ‌্য পেতে মানিক ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডলকে ফের তলব করে জেরা করতে চায় ইডি। ইডির সূত্র জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই দু’দফায় ইডি তাপস মণ্ডলকে জেরা করেছে। জেরায় তাপস আরও কয়েকজনের নাম বলেছেন। ওই ব‌্যক্তিরা টেট দুর্নীতির সঙ্গে কোনওভাবে যুক্ত ছিলেন কি না, তা জানতে আরও এক বা দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে ইডি।

[আরও পড়ুন: আচার্য বিতর্কে নয়া মোড়, এবার কেরলের ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্তের দাবি রাজ্যপালের]

২০১১ সাল থেকেই দুর্নীতির সঙ্গে মানিক যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁরই ঘনিষ্ঠ সঙ্গী ২০১২ সাল থেকে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলে টাকা তুলতে শুরু করে। তখন তাঁর সঙ্গে কয়েকজনের যোগাযোগ হয়েছিল। তাপসকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই ব‌্যক্তিদের যুক্ত থাকার ব‌্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত হতে চান গোয়েন্দারা। এর পর নভেম্বরের দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে তাঁদের সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের দফতরে ইডি তলব করতে পারে। ইডির আধিকারিকদের মতে, তাঁদের মধ্যে কেউ প্রভাবশালীও থাকতে পারেন, এমন সম্ভাবনাও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

ইডি জানিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তথা বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যর টাকার হদিশ পেতে মরিয়া আধিকারিকরা। তাঁদের মতে, ৬০০টি ডিএলএড কলেজ থেকে অফলাইনে ভরতির নাম করে মানিক একেকজন ছাত্র-ছাত্রীর কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। একেকটি কলেজে গড়ে ৩০ বা তার বেশি সংখ‌্যক ছাত্র-ছাত্রী এই পদ্ধতিতে ভরতি হয়েছেন, এমন সম্ভাবনা রয়েছে। এই তালিকা ইডি তৈরি করছে। এই ক্ষেত্রেও গড়ে বছরে দশ কোটি টাকার টাকার দুর্নীতির সম্ভাবনা ইডি দেখছে। ইডির মতে, ২০১৮ সাল থেকে এই টাকার পরিমাণ ৩০ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা নগদে মানিক ভট্টাচার্যর কাছে পৌঁছে যেত বলে অভিযোগ ইডির।

[আরও পড়ুন:ভোটব্যাংকের রাজনীতি! টাকায় দেবদেবীর ছবির ‘আবদার’ নিয়ে কেজরিকে তুলোধোনা বিরোধীদের]

এ ছাড়াও মানিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া সিডি থেকে চার হাজার চাকরিপ্রার্থীর নাম উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে আড়াই হাজার যে প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি পেয়েছেন, সেই ব‌্যাপারে ইডি নিশ্চিত। তাঁরা টাকা দিয়ে চাকরি পেয়ে থাকলে তাঁদের কাছ থেকে মানিকরা অন্তত দু’শো কোটি টাকা পেয়েছেন বলে ধারণা ইডির। যদিও তাঁদের মধ্যে কতজন টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন, সেই ব‌্যাপারে ইডি নিশ্চিত হতে চাইছে। এখনও পর্যন্ত যে ৩০টি অ‌্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে, তাতে কত টাকা রয়েছে, তাও জানার চেষ্টা হচ্ছে। আবার রাজ্যের বিভিন্ন বিএড ও ডিএলএড (D El ed) কলেজে শংসাপত্র দেওয়া থেকে শুরু করে তাদের মাধ‌্যমে ফাঁকা উত্তরপত্র ভরতি করিয়ে প্রাথমিক স্কুলে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে বিপুল টাকা তোলা হয়েছে বলে অভিযোগ। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বদলি করানোর ক্ষেত্রেও প্রচুর টাকা নেওয়া হয়েছে বলে খবর পেয়েছে ইডি। সেই বিপুল পরিমাণ টাকার সন্ধানে ফের জেলে গিয়ে মানিক ভট্টাচার্যকে জেরা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে ইডি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement