shono
Advertisement

ডিজিটাল যুগেও দীপাবলিতে দেদার বিকোচ্ছে মাটির প্রদীপ

খুশি মৃৎশিল্পীরা৷ The post ডিজিটাল যুগেও দীপাবলিতে দেদার বিকোচ্ছে মাটির প্রদীপ appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 03:11 PM Nov 01, 2018Updated: 03:11 PM Nov 01, 2018

দেবব্রত দাস, খাতড়া: নেট দুনিয়া, ডিজিটালের যুগ। আলোর উৎসব দীপাবলিতেও নিত্য নতুন ডিজাইনের ছোঁয়া। ঘর সাজাতে ব্যস্ত সাধারণ মানুষ ঝুঁকছেন আধুনিক বৈদ্যুতিক সরঞ্জামের দিকে। টুনি বালব। এলইডি বালব৷ চিনা আলোর রকমারি মডেল। মনভুলানো হরেক কিসিমের বাহারি আলোর দ্যুতি। মোমবাতি। হস্তশিল্পের বাজার ছেয়ে গিয়েছে অত্যাধুনিক ডিজিটাল বৈদ্যুতিক আলোতে। কত রকমের সামগ্রী। কত যে নাম। তবে এরই মধ্যে অবশ্য নিজেদের জায়গা আজও ধরে রেখেছেন পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা। এই গ্রামের শিল্পীদের তৈরি পরিবেশবান্ধব মাটির প্রদীপের কদর এতটুকু কমেনি। এ বছরও শহরে দেদারে বিকোচ্ছে মাটির প্রদীপ। টেরাকোটার গ্রাম বলে পরিচিত পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন মাটির প্রদীপ তৈরিতে।

Advertisement

[বাঁকুড়ায় অনাবৃষ্টির মার, ফসল নষ্ট হলে আন্দোলনের হুমকি কৃষকদের]

বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের পাঁচমুড়া গ্রাম টেরাকোটার জন্য বিখ্যাত। জেলা, রাজ্য ছাড়িয়ে টেরাকোটার খ্যাতি পৌঁছে গিয়েছে বিদেশ বিভুঁইয়েও। সেই পোড়ামাটির গ্রামের মৃৎশিল্পীদের ঘরে ঘরে এখন মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে তাঁরা সপরিবারে নেমে পড়েছেন প্রদীপ তৈরিতে। গ্রামে পা দিলে শুধু শুনতে পাওয়া যাচ্ছে চাকা ঘোরার সোঁ সোঁ আওয়াজ। মাটির তাল পাকিয়ে একমনে কাজ করছেন কুম্ভকার সম্প্রদায়ের আট থেকে আশি-সব বয়সের কারিগররা৷ বহুজাতিক বাজারি প্রতিযোগিতা৷ আধুনিকমনস্ক যুবসমাজ। মণ্ডপে মণ্ডপে থিমের রমরমা। তবুও দীপাবলিতে মাটির প্রদীপের এমন কদর বর্তমান দুনিয়াতেও টিকে রয়েছে কীভাবে?

[গাড়ি চেকিংয়ের সময় দুর্ঘটনা, আহতকে রাস্তায় ফেলে পালাল পুলিশ]

পাঁচমুড়ার প্রখ্যাত মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন, “দীপাবলিতে এখনও আমাদের তৈরি মাটির প্রদীপের জন্য খদ্দেরদের লাইন লেগে যায়। বিভিন্ন সাইজের মাটির প্রদীপ সুন্দর নকশা করে তৈরি হচ্ছে। এখানকার কাজ পুরোপুরি হস্তশিল্পের। কোনওরকম ছাঁচ বা ঢালাই ব্যবহার করা হয় না। এটাই আমাদের শিল্পকর্ম। এর জন্যই আমাদের মাটির প্রদীপের কদর এখনও রয়ে গিয়েছে। অনেকেই অগ্রিম টাকা দিয়ে প্রদীপের বরাত দিয়ে গিয়েছেন।” পড়াশোনার পাশাপাশি বাড়িতেই মাটির নানা কাজ করেন পাঁচমুড়া কলেজের ছাত্র লক্ষীকান্ত কুম্ভকার। তিনি বলেন, “দীপাবলির মরশুমে মাটির তৈরি প্রদীপ ভালই বিক্রি হচ্ছে। পুজোর মরশুমে এই কাজ করে আমার পড়াশোনার খরচ অনেকটাই উঠে যায়। আমাদের প্রদীপের গুণগত মান খুবই ভাল। তাই প্রদীপের কদর রয়েছে।”

[পরকীয়ার অভিযোগে প্রকাশ্যে তরুণীকে মারধর যুবকের]

কীভাবে তৈরি করা হচ্ছে এই প্রদীপ? মৃৎশিল্পী মুরলী কুম্ভকার ও নেপাল কুম্ভকার বলেন, “প্রথমে মাটি ভিজিয়ে তাল করা হয়। এরপর চাকার সাহায্যে ওই মাটির তালকে হাত দিয়ে বিভিন্ন সাইজের প্রদীপ তৈরি করা হয়। প্রদীপের মধ্যে রকমারি নকশা, অলঙ্কার করা হয়। এরপর রোদে শুকিয়ে ভাটিতে সাজিয়ে পাতা, কাঠের জ্বালানি দিয়ে পোড়ানো হয়। বিভিন্ন সাইজের প্রদীপের বিভিন্ন দাম। দু’টাকা থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত দামের প্রদীপ রয়েছে।” দীপাবলি মানেই আলোর উৎসব। তবে আধুনিকতার কাছে হার মানেনি সাবেকিয়ানা। ডিজিটাল যুগেও নিজেদের শিল্পকর্মের ঐতিহ্য আজও ধরে রেখেছে টেরাকোটার গ্রাম পাঁচমুড়ার মৃৎশিল্পীরা। পোড়া মাটির হাতি, ঘোড়া, মনসার চালির সঙ্গে প্রদীপের সুখ্যাতি যে অটুট রয়েছে এই গ্রামের দীপাবলির বাজার তারই প্রমাণ দিচ্ছে।

The post ডিজিটাল যুগেও দীপাবলিতে দেদার বিকোচ্ছে মাটির প্রদীপ appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement