সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: উমার আরাধনায় সম্প্রীতির নজির গড়ল ঝালদা। দুর্গা প্রতিমা গড়তে অর্থ দিলেন মুসলিম যুবক। পুরুলিয়ার ঝালদা পুর শহরের বাঁধাঘাট সর্বজনীন পুজোয় মা দুর্গার প্রতিমা গড়তে মঙ্গলবার দুপুরে পঁচিশ হাজার টাকার চেক তুলে দিলেন ঝালদা এক নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শেখ সুলেমান। এগারো বছরে পা দেওয়া এই পুজোয় শামিল এলাকার একাধিক মুসলিম যুবকরা।
[আরও পড়ুন: জেদের বশেই জয়, জামবনিতে বন্ধ হওয়া পুজো চালু শবর-সাঁওতাল রমণীদের হাত ধরে]
সবাই মিলেই পুজোর চাঁদা আদায় থেকে শুরু করে পুজোর সমস্ত আয়োজন সারেন। এমনকী মহানবমীর মিহিদানা ভোগ বিলিতে একেবারে প্রথম সারিতে দেখা যায় শেখ সুলেমান, শেখ শাহেজামাল, হুসেন আহমেদদের। তাঁদের সঙ্গে হাতে–হাত মিলিয়ে পুজোর কাজ করেন দেবস্মরণ কর্মকার, রাধা কালিন্দী ও রঞ্জিৎ কর্মকাররা। এখানেই শেষ নয়। এই পুজো ঝালদা পুর শহরে একেবারে ঢোকার মুখে। ফলে পাশেই পঞ্চায়েত এলাকা। ঝালদা এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির ঝালদা–দঁড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের মুসলিম অধ্যুষিত দুই গ্রাম হুসেনডি ও কান্টাডিও এই পুজোয় যোগ দেয়। ফলে পুজোর ক’টা দিন যেন সম্প্রীতির সুতোয় গাঁথা বাঁধাঘাট সর্বজনীন। তাই তো শেখ সুলেমান, হুসেন আহমেদ বলেন, “ধর্ম যার–যার। উৎসব সকলের। দুর্গাপুজো তো বাংলার উৎসব। তাই সেই উৎসবে আমরা ফি বছরই পরিবার নিয়ে মেতে উঠি।”
ধর্ম নিয়েই যখন পুরুলিয়া-সহ এই রাজ্য রাজনীতিতে নানা শোরগোল। তখন ঝালদা পুর শহরের বাঁধাঘাট যেন সম্প্রীতির একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে। এলাকার হিন্দু-মুসলিম সকলে মিলেই গত পনেরো দিন ধরে পুজোর আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে উঠেছেন। পুজো মণ্ডপের পাশেই মসজিদ। ফলে যখন নমাজ পাঠ হয় তখন পুজোর মাইক কিছুক্ষনের জন্য বন্ধ রাখা হয়। এভাবেই সম্প্রীতির আবহে পুজো হয়ে আসছে বাঁধাঘাট সর্বজনীনে। এখানে মা উমা একাই পূজিত হন। তবে মাতৃ প্রতিমার পাশে দেবী ও তার ছেলে-মেয়েদেরকে নিয়ে কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসছেন। পুজো আয়োজকদের দাবি, এই মডেল সকলের চোখ টানবে। পুজো কমিটির সভাপতি দেবস্মরণ কর্মকার বলেন, “আমাদের এই পুজোয় চোখ ধাঁধানো থিম নেই। নেই বাহারি আলো। ছিমছাম পরিবেশের পুজোয় ‘সম্প্রীতি’ই আমাদের থিম। আর এই সংস্কৃতিটাই আমরা ধরে রাখতে চাই।”
ছবি: অমিত সিং দেও
[আরও পড়ুন: এই পুজোয় হাতজোড় করে প্রণাম করলেই ছবি তুলবেন স্বয়ং মা দুর্গা! কোথায় জানেন?]
The post সম্প্রীতির নজির, উমা আরাধনার প্রস্তুতিতে শামিল মুসলমান যুবকেরা appeared first on Sangbad Pratidin.
