সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বসিরহাটে অশান্তির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন নবান্নে সরাসরি বিজেপি ও আরএসএসের বিরুদ্ধে আঙুল তুললেন, সেদিনই বিকেলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূষ গোয়েলও পাল্টা রাজ্য সরকারের সমালোচনায় মুখর হলেন। রাজনৈতিক ফায়দার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসিরহাটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেননি, বক্তব্য কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ ও কয়লা মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর। বসিরহাটে অশান্তির জন্য তিনি কড়া ভাষায় রাজ্য সরকারের নিন্দা করেন।
[বসিরহাটে অশান্তির নেপথ্যে কারা, জানতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ মমতার]
এদিন মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে সাফ জানান, দার্জিলিং ও বাদুড়িয়ায় অশান্তি তৈরিতে ‘বিদেশি শক্তি’র হাত রয়েছে। তাদের সঙ্গে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের ভাল সম্পর্ক রয়েছে। আরএসএস ও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে মানুষ উসকানি দেওয়ার অভিযোগও তোলেন। বসিরহাটের ঘটনার তদন্তে কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সৌমিত্র পালের নেতৃত্বে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। পাল্টা রাজ্য বিজেপির তরফে এদিন রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধ সত্ত্বেও বসিরহাটে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওম মাথুর, মিনাক্ষী লেখি ও সত্যপাল সিংকে মাইকেল নগরে গ্রেপ্তার করা হয়। একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে বাদুড়িয়া ও বসিরহাটে অশান্তির মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন মমতা।
যদিও কেন্দ্রের অভিযোগ, রাজ্য সরকারই বসিরহাটের ঘটনার রিপোর্ট দিতে দেরি করছে। কেন্দ্রের একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা ANI জানিয়েছে, বসিরহাট ও দার্জিলিংয়ের ঘটনা নিয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে দেরি করছে রাজ্য। অথচ মমতা এদিন নবান্নে বলেন, “সব রিপোর্টই দেওয়া হয়েছে। এক মাস কেটে গেলেও কেন্দ্র আধা সামরিক বাহিনী পাঠাচ্ছে না। যাদের পাঠিয়েছে তাঁদের হাতে লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কাজ নেই।” সোশ্যাল মিডিয়াকে হাতিয়ার করে বিজেপির পার্টি অফিস থেকে গুজব রটিয়ে বাংলাকে উত্তপ্ত করে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ভোজপুরি সিনেমার দৃশ্যকে বাংলার বলে চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশের কুমিল্লার ছবি ব্যবহার করে মানুষকে খেপিয়ে তোলা হচ্ছে। যারা এই কুকীর্তি করেছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি পেতে হবে বলেও এদিন সতর্ক করে দিয়েছেন মমতা। তবে মমতা যাই বলুন না কেন, কেন্দ্র ও রাজ্যের তরজা যে এখনই থামছে না, সেটা পীযূষ গোয়েলের এদিনের মন্তব্য থেকেই স্পষ্ট।