সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ‘ডবল ইঞ্জিন’-এর মাধ্যমে বাংলায় BJP সরকার ক্ষমতায় এলে গত ৫০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, তা আগামী পাঁচ বছরে করে দেখাবে বিজেপি। বুধবার রাঢ়বঙ্গের পরিবর্তন যাত্রার সমাপ্তি কর্মসূচিতে পুরুলিয়ার (Purulia) জয়পুরের কোটশিলায় একটি জনসভায় বক্তব্য রাখলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়করি (Nitin Gadkari)। সেখানেই এই কথা বললেন তিনি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়কড়ির সঙ্গে ছিলেন আদিবাসী মন্ত্রকের মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা ও মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। রথযাত্রার শেষের কর্মসূচিতে দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকলেও এই জমায়েত ছিল শুধু জয়পুর বিধানসভাকে নিয়ে। ফলে জনসভায় উপচে পড়া ভিড় বলতে যা বোঝায় তা ছিল না। এদিন আবার গড়করির বাঘমুন্ডি বিধানসভার ঝালদা শহরে ওই রথকে নিয়ে রোড শো করার কথা ছিল। তারপর ওই জনসভায় যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অনুমতি না মেলায় তা বাতিল হয়। পরবর্তীতে জনসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়কড়ির বলেন, “মোদিজির নেত্বত্বে রাজধানী সুপার ফাস্ট দৌড়াচ্ছে। আমি আপনাদের এই কথাই বলতে এসেছি। ডবল ইঞ্জিনের মাধ্যমে বাংলায় বিজেপি সরকারকে জুড়ে দিলে গত ৫০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি তা আগামী পাঁচ বছরে বিজেপি করে দেখাবে।” এরপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আপনারা লাল ঝান্ডাকে দেখেছেন। কংগ্রেসকে সুযোগ দিয়েছেন। দশ বছর মমতাকে দেখলেন। চারদিকে শুধু বেকার। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছেন না। স্বাস্হ্যের সুবিধা নেই। তাই বদল দরকার।”
[আরও পড়ুন: ‘ও লাভলি’র পর ‘খেলা হবে’, নতুন গান গেয়ে ফের বিজেপিকে বিঁধলেন মদন মিত্র]
উন্নয়নের কাজে যে রাজ্যের সহযোগিতা মিলছে না এই অভিযোগ করে বলেন, “জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে না রাস্তা হবে কি করে? তৃণমূলের সাংসদরা আমার কাছে আসছেন। কিন্তু জমি অধিগ্রহণই হচ্ছে না। কীভাবে কাজ করব?” তা স্বত্বেও তাঁর দপ্তর যে ২১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে পুরুলিয়ার বাইপাসের অনুমোদন দিয়েছে সেই কথা উল্লেখ করেন। চার লেনের দশ কিমি রাস্তার কাজ দ্রুত শেষ করা হবে বলেও জানান। সেইসঙ্গে ইসলামপুর বাইপাসেরও অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানান। চার লেনের ওই বাইপাস ৩৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে হবে। ফলে ওই এলাকায় দুর্ঘটনা একেবারেই কমে যাবে বলে আশ্বাস দেন তিনি। পুরুলিয়া-বাঁকুড়া ৬০-এ জাতীয় সড়ক নতুন করে তৈরি করা হয়েছে সে কথাও বলেন। দেশ যেভাবে দ্রুত বদলাচ্ছে সেকথা তুলে ধরে সভায় থাকা জনতার কাছে জানতে চান, “বাংলায় কী এইরকম উন্নয়ন চান না? যেখানে গণতন্ত্র থাকবে, অধিকার থাকবে।” বাংলার মন জয়ে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের কথা বলেন। তাঁদেরকে আদর্শ করেই বিজেপি এগোচ্ছে। তাহলে তারা কি ভাবে ‘বহিরাগত’ হয় এদিনের সভা থেকে সেই প্রশ্নও তোলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতীন গড়করি।
যদিও পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পালটা দেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, “দিল্লি, গুজরাট, মহারাষ্ট্রের নেতারা ‘বহিরাগত’–ই। তাই তাঁরা বাংলার উন্নয়ন দেখতে পাচ্ছেন না। বলেছিলেন বছরে দু’কোটি চাকরি দেবেন। সেই প্রতিশ্রুতি কোথায় গেল? মানুষ এর জবাব দেবে।”