সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৫০ বছরের আইনি লড়াইয়ের অবসান। উত্তরপ্রদেশের বাঘপত জেলার একটি জমিকে হিন্দুদের ‘জতুগৃহ’ হিসাবেই মান্যতা দিল আদালত। এই মামলায় হিন্দুপক্ষের দাবি ছিল জায়গাটি মহাভারতের সময়কার ‘জতুগৃহ’। মুসলিমপক্ষের বক্তব্যের ছিল সেখানে এক সুফি সাধকের সমাধিস্থল রয়েছে। অবশেষে পাঁচ দশক পর বিতর্কিত জমির মালিকানা হিন্দুদের হাতেই তুলে দিল যোগী রাজ্যের স্থানীয় আদালত।
জানা গিয়েছে, জতুগৃহ বনাম মাজার মামলাটি নিয়ে প্রায় ৫৩ বছর ধরে আইনি লড়াই চলছিল। বাঘপতের বিতর্কিত জমিটি নিয়ে হিন্দুপক্ষের বক্তব্য ছিল, জায়গাটি মহাভারতের জতুগৃহ। যেখানে পাণ্ডবদের পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল কৌরবরা। তাই এই জমির মালিকানা তাঁদের পাওয়া উচিত। অন্যদিকে, মুসলিমদের দাবি, জমিটিতে যে সমাধি রয়েছে তা সুফি সাধক শেখ বদরুদ্দিনের। এনিয়েই পাঁচ দশকের বিবাদ ছিল দুপক্ষের মধ্যে। সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি এই মামলার রায় ঘোষণা হয় বাঘপতের জেলা ও দায়রা আদালতে। শুনানিতে বিচারক শিবম দ্বিবেদী ১০০ বিঘার উপর বিবাদিত জমির মালিকানা হিন্দুপক্ষের হাতে তুলে দেন। মুসলিমপক্ষের সমস্ত দাবি নাকচ করে দেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘দ্রুত সেরে উঠুন’, ক্যানসার আক্রান্ত রাজা তৃতীয় চার্লসের জন্য প্রার্থনা মোদির]
বলে রাখা ভালো, ১৯৭২ সালে বিতর্কিত জমির উপর মালিকানা দাবি করে মামলা করেন ওয়াকফ বোর্ডের সদস্য মুখিম খান। তথাকথিত সমাধিস্থলটি নিয়ে বিরোধীপক্ষ কৃষ্ণদত্ত মহারাজের সঙ্গে আইনি লড়াই শুরু হয় । মুখিম খানের বক্তব্য ছিল, সেখানে সুফি সাধক শেখ বদরুদ্দিনের সমাধি রয়েছে। হিন্দুদের হয়ে কৃষ্ণদত্ত মহারাজই মামলা দায়ের করেছিলেন। তাঁর দাবি ছিল, বারনাওয়া গ্রামের জমির ওই অংশটি মহাভারতের জতুগৃহ এবং গান্ধীধাম আশ্রম বাকি জমির মালিক।
কিন্তু তাৎপর্যের বিষয় হল, উত্তরপ্রদেশ সরকার প্রয়াগরাজ থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূরে একটি জায়গাকে মহাভারতের জতুগৃহ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। ২০২৫ সালে মহা কুম্ভমেলার আগে হাণ্ডিয়া ব্লকের ওই জায়গাটিকে নতুন রূপে গড়ে তোলার তোরজোড় চলছে। ফলে কোন জায়গাটি আসল জতুগৃহ তা নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই যাচ্ছে। চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যার রামমন্দিরে প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়েছে রামলালার। এই আবহে যোগী রাজ্যের আরেকটি বিতর্কিত জমির মামলার রায়ও হিন্দুদের পক্ষে গেল। ফলে প্রশ্ন উঠছে, আইন হাতিয়ার করে বিবাদিত ধর্মস্থানগুলোর চরিত্র পালটে দিতে সচেষ্ট হয়েছে গেরুয়া শিবির?