shono
Advertisement

ঠিক যেন সিনেমা! খুনের দায়ে জেলে, আইন পড়ে নিজের মুক্তি আদায় যুবকের

জেলের কুঠুরিতেই শুরু জ্ঞান সাধনা!
Posted: 01:53 PM Dec 11, 2023Updated: 01:53 PM Dec 11, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক যেন জনপ্রিয় বলিউডি সিনেমার চিত্রনাট্য। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই দুই কনস্টেবলকে খুন করে রাইফেল লুঠের দায়ে যেতে হয়েছিল জেলে। তাঁর ‘অ্যালিবাই’ ছিল অকাট্য। কিন্তু তাতে কান দেয়নি, প্রমাণ করা যায়নি আদালতেও। কিন্তু যে অপরাধ তিনি করেননি, তার দায়ে কারাদণ্ডও মেনে নিতে পারেননি তরুণ অমিত চৌধুরি। বুঝেছিলেন, এই অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ‘জ্ঞানের আলো’। যে-সে নয়, আইনের জ্ঞান। জেলের কুঠুরিতেই শুরু হল সাধনা। অবশেষে ১২ বছর পর নিজেই সওয়াল করে আদায় করলেন মুক্তি। আলোয় ফিরলেন অমিত। যদিও জীবনের মূল্যবান ১২ বছর আর ফিরে পাবেন না, আফসোস সেটাই।

Advertisement

উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মেরঠের বাসিন্দা অমিত। ২০১১ সালে দুই কনস্টেবল কৃষ্ণপাল ও অমিত কুমার খুন হন। লুঠ হয় তাঁদের রাইফেল। অভিযোগের আঙুল ওঠে কুখ্যাত কাইল গ্যাংয়ের দিকে। আর মন্দ কপাল, অমিত চৌধুরিকেও সেই গ্যাংয়ের সদস্য হিসাবে দাগিয়ে দেওয়া হয়। কারণ, তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী মায়াবতী অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারির নির্দেশ দিয়েছিলেন। অমিত ঘটনাস্থলের ধারেকাছেও ছিলেন না। বোনের সঙ্গে তিনি ছিলেন শামলি জেলায়। কিন্তু পুলিশ কোনও কথা কানে নেয়নি। আরও ১৬ জনের সঙ্গে তাঁকেও অপরাধী বলে দাগিয়ে দেয়। ভারতীয় দণ্ডবিধি ও জাতীয় নিরাপত্তা আইনের মতো কঠোর ধারা দেওয়া হয় তাঁদের বিরুদ্ধে। তার পরের দুবছর কাটে দুঃস্বপ্নের মতো। মুজফফরনগর জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে তাঁর ভবিষ্যৎই অন্ধকারে ডুবে যেতে বসেছিল বাগপতের কিরথাল গ্রামের এক চাষির ছেলে অমিতের। তাঁকে নিজেদের গ্যাংয়ে শামিল করার চেষ্টা করে অনিল দুজানা, ভিকি ত্যাগীর (দু’জনেই এনকাউন্টারে মৃত) মতো গ্যাংস্টার। কিন্তু জেলর অমিতকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দেন।

[আরও পড়ুন: SUV-র সঙ্গে ডাম্পারের ধাক্কা, কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাণ গেল ৩ জনের]

২০১৩ সালে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেলেও মাথায় অপরাধের কলঙ্ক লেগেই ছিল। স্বপ্ন ছিল সেনায় যোগ দেবেন। কিন্তু তা সম্ভব নয় বুঝে পরিবার যাতে মাথা উঁচু করে সমাজে চলতে পারে, সে জন্য বেছে নিলেন আইনের পথ। একে একে পাস করলেন বিএ, এলএলবি, এলএলএম। উত্তীর্ণ হলেন বার কাউন্সিলের পরীক্ষাতেও। নিজেকে কলঙ্কমুক্ত করার লড়াই শুরু হল। সাক্ষী পুলিশ অফিসার তাঁকে শনাক্তই করতে পারলেন না। হাজির করলেন আরও সাক্ষ্যপ্রমাণ। বিচারক নিঃসন্দেহ তাঁকে এবং আরও ১২ জনকে বেকসুর ঘোষণা করলেন। ততদিনে আসল অপরাধীদের জন্যও ভাগ্য নির্ধারিত হয়েছে। সুমিত কাইল ২০১৩-তে এনকাউন্টারে নিহত। নীতুর যাবজ্জীবন ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে। রায় ঘোষণার আগেই ক্যানসারে মারা গিয়েছে ধর্মেন্দ্র। আর অমিতের সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন ভেঙে গেলেও হাল ছাড়ছেন না তিনি। “এখন আমি ফৌজদারি আইনে পিএইচডি করতে চাই। আমি মনে করি, ঈশ্বর আমাকে অন্য হতভাগ্যদের জন্য লড়াই করার জন্য বেছে নিয়েছেন,” বলেছেন অমিত।

[আরও পড়ুন: ৩ দিনের লুকোচুরি শেষ! নদী পেরিয়ে ডেরায় ফিরল বাঘ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement