সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সামনেই ইদ। ওই দিন আল্লাহ কুরবানি চান, এমনটাই মনে করেন ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা। কিন্তু উত্তরপ্রদেশে এখন গো-হত্যা নিষিদ্ধ। আর তাই সম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে এই প্রথমবার মৌলবিরা মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য একটি নির্দিষ্ট গাইডলাইন বেঁধে দিলেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম সংগঠন জমিয়ত-উলেমা-ই-হিন্দ-এর অনুরোধ, ইদে ‘সাদা পশু’ কুরবানি করবেন না। মনে করা হচ্ছে, মূলত গরুর কুরবানি রুখতেই এই আবেদন করা হয়েছে।
বিজেপি শাসিত এই রাজ্য গত কয়েক মাস ধরেই গো-হত্যা ও গো-রক্ষকদের তাণ্ডবে সংবাদের শিরোনামে এসেছে। ২ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে পালিত হবে কুরবানি ইদ। উত্তরপ্রদেশে মোট ২০ কোটি বাসিন্দাদের মধ্যে প্রায় ১৯ শতাংশই মুসলিম। এবছরের শুরুতেই ওই রাজ্যে বিপুল ভোটে জিতে ক্ষমতার মসনদে বসেছেন কট্টর হিন্দুত্বের ‘পোস্টার বয়’ যোগী আদিত্যনাথ। ক্ষমতায় এসেই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি মোতাবেক গো-হত্যার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
এই পরিস্থিতি, মুসলিম সংগঠনটির তরফে আবেদন জানানো হয়েছে, ‘কোনও পরিস্থিতিতেই আসন্ন ইদে সাদা পশুর কুরবানি দেবেন না।’ সাধারণত, ইদের সময় গরু বা উট কুরবানি দেন মুসলিমরা। কিন্তু আরএসএসপন্থী মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চের দাবি, ছাগল কুরবানি দেওয়াও ‘তিন তালাক’-এর সমান খারাপ। স্থানীয় সূত্রের খবর, যোগীর রাজ্যের মুসলিমরা এখন কার্যত সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তাঁরা কুরবানি দেবেন কি দেবেন না, এই নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত। মুসলিমদের মধ্যে একটি বড় অংশই দ্বিধা কাটাতে মৌলবিদের দ্বারস্থ হচ্ছেন।
ইরানের এক শিয়া মৌলবি সৈয়দ আলি হোসেইনি সিস্তানি বলছেন, ‘হজযাত্রায় কুরবানি বাধ্যতামূলক। আসলে কারও সম্পদের সঙ্গে এই কুরবানি ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে। কিন্তু কেউ যদি কুরবানি নাও দেন, তাতেও কোনও ক্ষতি নেই। করলে খুবই ভাল, কিন্তু না করলেও যে খুব একটা ক্ষতি রয়েছে এমনটাই নয়। আবার সুন্নি মৌলবি খালিদ রশিদ ফরঙ্গি মহলি বলছেন, ‘সুন্নিদের জন্য কুরবানি বাধ্যতামূলক।’ সবমিলিয়ে উত্তরপ্রদেশের পরিস্থিতি কিন্তু এই মুহূর্তে বেশ উদ্বেগজনক। এডিজি(আইনশৃঙ্খলা) আনন্দ কুমার জানিয়েছেন, যে কোনওরকম বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি রুখতে পুলিশ সবরকমভাবে তৈরি রয়েছে।
The post ইদে গো-হত্যা করবেন না, যোগীর রাজ্যে আবেদন মুসলিমদেরই appeared first on Sangbad Pratidin.