সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেজিংকে বড়সড় ধাক্কা ওয়াশিংটনের। বহুল ব্যবহৃত চিনা ড্রোনের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করার নির্দেশ দিল মার্কিন সেনা। চিনা সংস্থা SZ DJI Technology Co লিমিটেডের নির্মিত ড্রোনগুলিতে কয়েকটি খামতি খুঁজে পেয়েই এই নির্দেশ মার্কিন সেনার। সূত্রের খবর, ওই ড্রোনগুলি থেকে আমেরিকার মাটিতে সাইবার হামলার ইঙ্গিত পেয়েছে সেনা, তাই অবিলম্বে সেগুলির ব্যবহার রদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
[মিগ অতীত, এবার মার্কিন এফ-১৬ ও সুইডিশ যুদ্ধবিমান পাচ্ছে বায়ুসেনা]
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এই খবর নিশ্চিত করে জানিয়েছে, মার্কিন সেনা এক আপৎকালীন নির্দেশ জারি করে চিনা ড্রোনের ব্যবহার বন্ধ করেছে। অভিযুক্ত চিনা সংস্থার কোনও ড্রোন বা অন্য কোনও ড্রোন যারা ওই চিনা সংস্থার সফটওয়্যার ব্যবহার করছে-এরকম একটি ড্রোনও আর ব্যবহার করা হবে না মার্কিন সেনাবাহিনীতে। ‘আক্রান্ত’ সফটওয়্যারগুলি ‘আন-ইনস্টল’ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ওই ড্রোনগুলির মেমোরি কার্ড, ব্যাটারি বার করে নিয়েছে সেনা।
আধুনিক যুদ্ধে অস্ত্র-গোলাগুলির চেয়েও অনেক বেশি ঘাতক হতে পারে সাইবার হামলা। সম্প্রতি তার আঁচও পেয়েছে আমেরিকা। ব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে হাসপাতাল, প্রতিরক্ষা থেকে শুরু করে পারমাণবিক প্রকল্প- সর্বত্রই এখন ইন্টারনেটের অবাধ গতিবিধি। আঙুলের একটিমাত্র চাপে মিসাইল উড়ে যেতে পারে শত্রুপক্ষের দিকে। কিন্তু দুষ্কৃতীদের হাতে পড়লে প্রযুক্তির আশীর্বাদই হয়ে উঠতে পারে অভিশাপ। সে কথা বিলক্ষণ জানেন মার্কিন সেনাকর্তারা। তবে কি মার্কিন সেনার বহুল ব্যবহৃত ড্রোনগুলি ‘হ্যাক’ করে পালটা আমেরিকার বিরুদ্ধেই ব্যবহার করতে পারে চিন? এই আশঙ্কাতেই কি তড়িঘড়ি সেগুলির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া হল? প্রশ্ন উঠছে সব মহলে।
[মার্কিন সেনাই সর্বশক্তিমান, আফগানিস্তানে ‘মাদার অফ অল বম্বস’ ফেলে হুঙ্কার ট্রাম্পের]
এতদিন মার্কিন সেনার বহু বিভাগেই এই চিনা ড্রোনগুলি ব্যবহার করা হত। নজরদারি থেকে শুরু করে জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে- সবরকম কাজেই ড্রোনগুলি ব্যবহৃত হত। আচমকা সেনার এই ‘কট্টর’ সিদ্ধান্তে যেন খানিকটা অপ্রস্তুত চিনা সংস্থাটিও। তারা এই সিদ্ধান্তের পালটা এক বিবৃতি জারি করে জানিয়েছে, ‘মার্কিন সেনা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্তত একবার আমাদের সঙ্গে আলোচনা করতে পারত।’ চিনা সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, যে কোনও সাইবার হামলা সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবিলায় তারা সবসময়ই পেন্টাগনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলে।
মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষার কাজে ব্যবহৃত ড্রোনের মধ্যে ৭০ শতাংশই চিনের তৈরি। ড্রোনগুলি বিক্রি করে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি আয় করে চিন। সেই চুক্তি বাতিল হয়ে গেলে চিনা প্রযুক্তি সংস্থাগুলির মাথায় হাত পড়তে বাধ্য। এই আয়ের অনেকটা অংশই চিন সামরিক খাতে বরাদ্দ করে। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন ‘আর্মি রিসার্চ ল্যাবরেটরি’ ও নেভি জানায়, ওই ড্রোনগুলি ব্যবহার করা আর আমেরিকার পক্ষে নিরাপদ নয়। ড্রোনগুলিতে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটি ধরা পড়েছে। ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরই মার্কিন সেনা চিনা ড্রোনগুলির ব্যবহার বন্ধ করে দিল।
[ফুরিয়ে এসেছে অস্ত্রভাণ্ডার, এখনই আরও বোমা দরকার মার্কিন সেনার]
The post বেজিংকে বড় ধাক্কা, চিনা ড্রোন ব্যবহার বন্ধ করল আমেরিকা appeared first on Sangbad Pratidin.