সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে রাশিয়া! এমনই অভিযোগ জানালো আমেরিকা। বুধবার ওয়াশিংটন দাবি করেছে, রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার নিয়ে যে চুক্তি রয়েছে তা লঙ্ঘন করছে রুশ প্রশাসন। রণক্ষেত্রে ইউক্রেনীয় ফৌজকে ধরাশায়ী করতে এখন নাকি এই পন্থাই অবলম্বন করছে মস্কো।
দুবছর পেরিয়ে গিয়েছে। এখনও রক্তক্ষয়ী লড়াই থামেনি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে। এই যুদ্ধে বহু ইউক্রেনীয় সৈনিক প্রাণ হারিয়েছেন। এনিয়ে একটি রিপোর্টে আমেরিকা দাবি করেছে, রুশ বাহিনী বিষাক্ত গ্যাস ভর্তি গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। যার সংস্পর্শে এসে অন্তত ৫০০ ইউক্রেনীয় সৈন্য অসুস্থ হয়ে পড়েন। এমনকী একজন রাশিয়ার টিয়ার গ্যাসে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারাও যান। এই প্রেক্ষিতে এদিন মার্কিন বিদেশ দপ্তর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, 'যুদ্ধের ময়দানে এই ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা হয়। ইউক্রেনের ফৌজকে অবস্থান থেকে সরাতে এই ভয়ংকর হাতিয়ার ব্যবহার করছে মস্কো। এইভাবেই তারা নিজেদের জয় নিশ্চিত করতে চায়।' ইতিমধ্যে এই রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের অভিযোগ তুলে রাশিয়ার কয়েকটি কেমিক্যাল কারখানার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মার্কিন প্রশাসন।
[আরও পড়ুন: জার্মানিতে কুপিয়ে খুন ২ ইউক্রেনীয় সেনাকে! গ্রেপ্তার রুশ নাগরিক]
উল্লেখ্য, গত কয়েকমাস ধরে ইউক্রেনে হামলার ধার বাড়িয়েছে রাশিয়া। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় আছড়ে পড়ছে মিসাইল। বাদ যাচ্ছে না শিক্ষাক্ষেত্রগুলোও। গত সোমবার ওডেসার বিখ্যাত সিফ্রন্ট পার্কের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আঘাত হানে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। আক্রমণ শানাতে ইস্কান্দার-এম নামে একটি ব্যালিস্টিক মিসাইল ব্যবহার করেছিল মস্কো। যার হামলা ঠেকানো কার্যত অসম্ভব বলে মত সমর বিশেষজ্ঞদের। কিয়েভকে বিপাকে ফেলতে এখন নতুন রণকৌশল নিচ্ছে মস্কো। অত্যাধুনিক হাতিয়ার ব্যবহার করছে রাশিয়া।
এদিকে, গত মাস দুয়েক মাস ধরে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করতে রণক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে কিয়েভকে। এপি সূত্রে জানা গিয়েছে, হাতিয়ারের অভাবে এমন কয়েকটি জায়গা রয়েছে যেখানে রুশবাহিনীর হামলার মোকাবিলা করা দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাই পিছু হটতে বাধ্য হচ্ছে জেলেনস্কির ফৌজ। এনিয়ে ইউক্রেন সেনার কর্নেল জেনারেল আলেকজান্ডার সিরস্কি জানিয়েছেন, “ইস্টার্ন ফ্রন্টে রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ হচ্ছে না। পরিস্থিতি এখন খুবই খারাপ। তাই সেখানকার তিনটি গ্রাম থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। মস্কোর বিরুদ্ধে নতুন করে আক্রমণ শানাতে অন্য জায়গায় ঘাঁটি তৈরি করা হয়েছে।” এখন মস্কোর হামলায় যে প্রাণহানি ঘটছে তার জন্য নিজেদের দুর্বল বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকেই দুষছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বারবার তিনি আমেরিকা-সহ পশ্চিমা বিশ্বের কাছে হাতিয়ারের জন্য দরবার করছেন।