অভিরূপ দাস: চার দেওয়াল, ছাদ সব কিছুই বাঁশের তৈরি। এমন পরিবেশ বান্ধব বাড়ি তৈরিতে কার্বন নির্গমণ অনেক কম। কতটা? পরিসংখ্যান বলছে আগামী ৫০ বছরে পরিবেশ থেকে ৫৭১ থেকে ৬০০ টন কার্বনের পরিমাণ কমিয়ে দেবে বাঁশের তৈরি বাড়ি। দ্রুত সর্বগ্রাসী শিল্পায়নের ফলে বাতাসে মিশছে কার্বন ডাই অক্সাইড। ক্রমশ উষ্ণতা বাড়ছে পৃথিবীর। পরিবেশবিদরা বলছেন, কংক্রিট নয়, পরিবেশ বান্ধব বাড়ি তৈরি করতে নজর দিতে হবে বাঁশের দিকে।
ইতিমধ্যেই ইউরোপ, আমেরিকায় শয়ে-শয়ে উঠছে এমন বাড়ি। এবার কি তাহলে বাংলা? মঙ্গলবার শহরের এক অভিজাত ক্লাবে তেমনই আশার কথা শোনালেন বাঁশ দিয়ে আবাসন তৈরির কারিগর ডা. উইলিয়াম হাল হিঙ্কেল। আমেরিকার বেসরকারী এক কোম্পানির সিইও উইলিয়াম জানিয়েছেন, শক্তপোক্ত যে বাঁশ দিয়ে বাড়ি তৈরি হয় তা থিক থিক করছে বঙ্গে। পরিবেশবিদরা মনে করছেন, চাহিদা যেভাবে বাড়ছে ২০৩০ সালের মধ্যে এমন ১ লক্ষ ৩৭ হাজার ৫০০ বাড়ি তৈরি হবে। যার আগাপাশতলা সবই বাঁশের। নতুন এই ‘বাঁশ আবাসন’ শিল্প বাংলায় গড়ে উঠলে কর্মসংস্থান হবে ৪৫ হাজার মানুষের।
[আরও পড়ুন: সর্ষের মধ্যেই ভূত! পুরুলিয়ার সরকারি হোমে যৌন হেনস্তা, গ্রেপ্তার শিশুসুরক্ষা আধিকারিকই]
এদিনের আলোচনায় আমেরিকার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা পেল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি রন সমার্স। তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে প্যাটন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জয় বুধিয়া বলেন, “ওয়েস্ট বেঙ্গল এখন চেঞ্জড বেঙ্গল। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পবান্ধব পরিবেশ তৈরি করেছেন। জমি অধিগ্রহণের বিষয়ে রাজ্য সরকারের সরল নীতি শিল্পপতিদের ক্রমশ আগ্রহী করেছে। চিনের সঙ্গে নয় আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে চায় ভারত।”
উল্লেখ্য অতি সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্যিক সম্পর্কের লেনদেন ছাড়িয়ে গিয়েছে চিনকে। ইউএস-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের প্রাক্তন সভাপতি রন সমার্স জানিয়েছেন, উন্নতমানের বাঁশের খোঁজে বেরিয়ে পরেছিল মার্কিন সিইও। ভারতে এসে প্রথম কলকাতাতেই তাঁর এই সম্মেলন। অদূর ভবিষ্যতে বাংলায় ম্যানুফেকচারিং ইউনিট গড়ে তুলবে সংস্থা। আশাবাদী রন। চিনের বাঁশের রমরমা হলেও তুলনায় অনেক বেশি শক্ত ভারতের কাষ্ঠল-চিরহরিৎ বাঁশ গাছ। পাঁচতলা তো বটেই পঁচিশতলা আবাসনও উঠবে এ দেশের বাঁশ দিয়ে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান নগরায়নের কথা মাথায় রেখে বাংলাই এখন আমেরিকার বাঁশের বাড়ির অন্যতম ডেস্টিনেশন।