সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময় এগিয়েছে অনেক। বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে কাজের জায়গা আরও বিস্তৃত হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সঙ্গে অঙ্ক, জীববিদ্যা, প্রযুক্তি – সব মিলেমিশে আরও উন্নত হয়েছে সামগ্রিক ব্যবস্থা। সেভাবেই প্রযুক্তির সাহায্যে মারণ ক্যান্সারের চিকিৎসায় নতুন পথ দেখিয়ে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান মঞ্চে পুরস্কৃত ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোরী কাব্য কোপ্পারাপু। ভার্জিনিয়ার বাসিন্দা উনিশ বছরের কাব্য পুরস্কার হিসেবে পাচ্ছেন ১০ হাজার মার্কিন ডলার।
[প্রাসাদ না জঙ্গিঘাঁটি! জইশের হেড কোয়ার্টার সম্পর্কে এই তথ্যগুলি জানেন?]
কোন নতুন রাস্তা দেখালেন উনিশ বছরের মেয়েটি? বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং অঙ্ক – এই চারটি বিষয়ের সমন্বয়, যা সংক্ষেপে STEM, এই পদ্ধতিটি ব্রেন ক্যানসারের একেবারে শেষ পর্যায় থেকেও কীভাবে মানুষকে ফিরিয়ে আনতে পারেন, সেই রাস্তা দেখিয়েছেন কাব্য। তিনি নিজে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স এবং বায়োলজি বিভাগে স্নাতক স্তরে পড়ছেন। কিন্তু কলেজে প্রবেশের পরপরই এত কম সময়ের মধ্যে কম্পিউটার সায়েন্সের খুঁটিনাটি প্রায় অনেকটাই জেনে ফেলেছেন। সেইসঙ্গে পড়ে ফেলেছেন মলিকিউলার বায়োলজি এবং জেনেটিক সায়েন্স। এরপর কাব্য যা করেছেন, তা অনেক মেধাবী পডুয়াই করেন না। কম্পিউটার সায়েন্স, মলিকিউলার বায়োলজি এবং জেনেটিক সায়েন্সকে একসূত্রে বেঁধেছেন। একের সঙ্গে সংযোগ করেছেন আরেকটিকে। আর চিকিৎসাবিজ্ঞানের এই তিন প্রাথমিক বিষয়কে সমন্বিত করে তিনি বোঝাতে পেরেছেন, ১০০ শতাংশ নিখুঁতভাবে ব্রেন টিউমারের প্রকৃতি আগে থেকে বোঝা যাবে। আর তাহলেই গোড়া থেকে চিকিৎসা শুরু করলে সুস্থ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। পাশাপাশি, কাব্যর ব্যক্তিগতস্তরের গবেষণা আরও অনেককে এই পথে আসতে উৎসাহিত করেছে বলে ওই প্রতিযোগিতার বিচারকরা মনে করছেন। সেটাও এক বড় সাফল্য উনিশ বছরের হার্ভার্ড পড়ুয়ার কাছে। ২০১৯ ন্যাশনাল STEM এডুকেশনের তরফে কাব্যকে অভিনন্দন জানানো হয়েছে।
[সুষমার ভাষণের পরই ভোলবদল, ভারতকেই কাঠগড়ায় তুলল ইসলামিক কর্পোরেশন]
কাব্য কোপ্পারাপুকে এখন থেকেই ‘ভাবী বৈজ্ঞানিক’ হিসেবে দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞান গবেষণা মহলের একটা বড় অংশ। বলা হচ্ছে, STEM এর সাহায্যে তাঁর দেখানো এই নতুন পথে কোনও টিউমারের প্রকৃতি জানার জন্য ডিএনএ বা অন্য কোনও পরীক্ষা করারও দরকার হবে না। টিউমারের মাত্র কয়েকটি চরিত্র দেখে নির্ভুলভাবে তা বলে দেওয়া সম্ভব। কম্পিউটার পদ্ধতিতে এটি হওয়ায় ভুল হওয়ার সুযোগ নেই। আর এটাই রোগ নির্ণয়ের সহজ এবং দ্রুততম রাস্তা। ক্যানসার নিয়ে বিশ্বজুড়ে এত ধরনের গবেষণার মধ্যে কাব্যর দেখানো STEM পদ্ধতির প্রয়োগ নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এত বড় স্বীকৃতি, কী বলছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত কন্যা? নাঃ, তেমন কিছুই বলত চাননি স্বল্পভাষী পড়ুয়া। পুরস্কারের অর্থমূল্য তিনি নিজের তৈরি কম্পিউটার প্রতিষ্ঠানের কাজে লাগাতে চান। হ্যাঁ, কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে অত্যন্ত আগ্রহী এই ছাত্রী নিজেই একটি সেন্টার খুলেছেন। যেখানে তাঁর কাছে কম্পিউটার শিখতে যান সাড়ে তিন হাজার ছাত্রছাত্রী। ভবিষ্যতে নাসার আলোচনা সভায় ডাক পেতে চলেছেন কাব্য কোপ্পারাপু।