সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেওয়াল জুড়ে বিশাল টিভি মনিটর। তাতে দেখা যাচ্ছে, একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করছে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান। রিমোট কন্ট্রোল হাতে পর্দার সামনে বসে পাইলট। একটি বোতাম টিপতেই আকাশে ভেসে বেড়ানো ড্রোন থেকে শত্রু ঘাঁটিতে আছড়ে পড়ছে মিসাইল। হলিউডের ‘স্টারওয়ার’-এর সেট নয়। চলচ্চিত্রকেও হার মানানো এই ঘটনার অকুস্থল মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার বৃহত্তম সামরিক ঘাঁটি ‘আল উদেইদ এয়ার বেস’। ইরাক, সিরিয়া ও আফগানিস্তান-সহ বিদেশের মাটিতে মার্কিন বায়ুসেনার অভিযান পরিচালনা করা হয় এই ঘাঁটি থেকেই। এবার সেই অত্যাধুনিক বায়ুসেনা ঘাঁটিকেই আরও উন্নত করে ‘ফিফথ জেনারেশন’ প্রযুক্তিতে সাজিয়ে তুলতে চলেছে ওয়াশিংটন।
[হ্যাকার হানায় নগ্ন ছবি ছড়িয়ে পড়ল এই অভিনেত্রীর]
মার্কিন বাযুসেনা প্রধান, জেনারেল ডেভিড গোল্ডফিন জানিয়েছেন, “ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আরও উন্নতমানের প্রযুক্তিতে সাজানো হবে মধ্যপ্রাচ্যের বায়ুসেনা ঘাঁটিটিকে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হলেও ভবিষ্যতের যুদ্ধের জন্য তৈরি করা হবে এটিকে।” কাতারের মার্কিন বায়ুসেনার ওই ঘাঁটিটি ‘সিএওসি’ (কম্বাইনড এয়ার অপারেশনস সেন্টার) নামে পরিচিত। বিশ্বজুড়ে, বিশেষ করে ইরাক, ইরান ও আফগানিস্তানের মতো দেশগুলির উপর ঘুরে বেড়ায় মার্কিন নজরদারি বিমান। এছাড়াও নজরদারি চালানো হয় চিন ও রাশিয়ার মতো দেশগুলির উপরও। রয়েছে স্যাটেলাইট ও ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারির প্রক্রিয়া। ওই প্রক্রিয়া থেকে প্রতি মুহূর্তে বিশাল পরিমাণ তথ্য জমা হয় ‘সিএওসি’-র কম্পিউটারে। তা বিশ্লেষণ করেই জঙ্গিদের কার্যকলাপ ও শত্রুদেশের গতিবিধির কথা আন্দাজ করে নেয় মার্কিন সেনা।
উল্লেখ্য, ইরাক ও সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে লড়াই চালাচ্ছে আমেরিকা। আফগানিস্তানে তালিবানের বিরুদ্ধেও অভিযান চালাচ্ছে তারা। এছাড়াও দক্ষিণ চিন সাগরে লালফৌজ ও কিমের কোরিয়ার সঙ্গেও চলছে চাপানউতোর। প্রতি মুহূর্তে রয়েছে হামলার আশঙ্কা। বিশাল পরিমাণের তথ্য জমা হচ্ছে ‘সিএওসি’-র কম্পিউটারগুলিতে। ফলে চাপ বাড়ছে। তাই এবার দ্রুত তথ্য বিশ্লেষণের জন্য গুপ্ত কম্পিউটার সিস্টেমটিকে আরও অত্যাধুনিক করে ভবিষ্যতের উপযোগী করে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন, মার্কিন বায়ুসেনার শীর্ষ আধিকারিক লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফরি হারিজিয়ান।
[আন্টার্কটিকায় বরফের নিচে জ্বলছে ৯১টি আগ্নেয়গিরি!]
প্রসঙ্গত, সিরিয়ায় আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে আমেরিকা ও রাশিয়া। বেশ কয়েকবার সংঘাতের দিকে এগিয়ে গিয়েছে রুশ ও মার্কিন যুদ্ধবিমান। এছাড়া সিরিয়ায় S-100 মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম স্থাপন করায় উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন। তাই কাতারের ওই ঘাঁটিটিকে আরও অত্যাধুনিকভাবে সাজিয়ে তুলছে আমেরিকা। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যথাসাধ্য যুদ্ধ এড়িয়ে চলার চেষ্টাই করছে আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনের মতো দেশগুলি। কিন্তু তাই বলে যুদ্ধের প্রস্তুতি ও ‘প্রেশার ট্যাকটিক’ থেকে বিরত হবে না কেউই।
The post যুদ্ধের আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যে ঢেলে সাজছে মার্কিন সামরিক ঘাঁটি appeared first on Sangbad Pratidin.