সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সমকামিতার সমর্থনে রামধনু রঙের টি-শার্ট পরেছিলেন। সেই অপরাধে এক মার্কিন সাংবাদিককে কাতার বিশ্বকাপের (Qatar World Cup) স্টেডিয়ামে ঢুকতে বাধা দেওয়া হল। গ্রান্ট ওয়াল নামে ওই সাংবাদিককে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, এই টি-শার্ট পরে স্টেডিয়ামে ঢোকা যাবে না। প্রতিবাদ জানালে তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, সমকামীদের সমর্থন করতে চেয়ে বিশেষ আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামতে চেয়েছিলেন বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের অধিনায়করা। কিন্তু ফিফার (FIFA) তরফে জানানো হয়, এই আর্মব্যান্ড পরে খেললে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। কাতারের প্রশাসনের চাপে পড়েই এহেন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
ঠিক কী ঘটেছে ওই সাংবাদিকের সঙ্গে? সোমবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম ওয়েলসের ম্যাচ ছিল। আহমেদ বিন আলি স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন গ্রান্ট। তাঁর পরনে ছিল একটি ফুটবলকে ঘিরে রামধনু রঙের বলয় আঁকা টি-শার্ট। সেই কারণেই তাঁকে স্টেডিয়ামে ঢুকতে দেননি স্থানীয় কর্তারা। তাঁকে বলা হয়, “এই টি-শার্ট পালটাতে হবে। এই রকম পোশাক পরা বেআইনি।” গোটা ঘটনাটি টুইট করেন গ্রান্ট। সেই অপরাধে তাঁর ফোনও কেড়ে নেওয়া হয়।
[আরও পড়ুন: ‘রোনাল্ডো হ্যান্ডসাম কিন্তু আমার ক্রাশ মেসিই’, বলছেন ফুটবল জ্বরে কাঁপতে থাকা জাহানারা]
প্রায় পঁচিশ মিনিট ধরে আটকে রাখা হয় গ্রান্টকে। বারবার করে টি-শার্ট বদলাতে বলা হয় তাঁকে। শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে স্টেডিয়ামে ঢোকার অনুমতি পান তিনি। ফিফার তরফে তাঁর কাছে ক্ষমাও চান এক আধিকারিক। বিতর্কিত টি-শার্ট পরেই স্টেডিয়ামে ঢুকে খেলা দেখেছেন তিনি। সেই ছবি পোস্ট করে গ্রান্ট অবশ্য জানিয়েছেন, আপাতত আর কোনও সমস্যায় পড়তে হয়নি তাঁকে।
প্রসঙ্গত, কাতারে সমকামিতা একটি অপরাধ। এই কারণেই বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে রাজি হননি একাধিক আন্তর্জাতিক তারকা। ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস-সহ বেশ কয়েকটি দেশ সমকামিতার পক্ষে আর্মব্যান্ড পরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু ফিফার তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, ফিফার দেওয়া আর্মব্যান্ড ছাড়া অন্য আর্মব্যান্ড পরলে ম্যাচের শুরু থেকেই দলের অধিনায়ককে হলুদ কার্ড দেখিয়ে দেওয়া হবে। সোমবার ইরান বনাম ইংল্যান্ডের ম্যাচের কিছুক্ষণ আগেই দেশগুলো যৌথভাবে জানিয়ে দেয়, বিশেষ আর্মব্যান্ড পরার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হচ্ছে। সমকামিতার সমর্থকদের যেভাবে হেনস্তার মধ্যে পড়তে হচ্ছে, তারপর কাতারে মানবাধিকার নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠছে।