সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ডন ব্র্যাডম্যান এবং উসেইন লিও বোল্ট। শনিবারের লন্ডন দুই শতাব্দীর অন্যতম দুই সেরা ক্রীড়াবিদকে যেন একাসনে বসিয়ে দিল। নিজের ক্রিকেটীয় জীবনের শেষ ইনিংসে শূন্য রানেই ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। সেদিন আর চার রান করতে পারলে ১০০ গড় ছুঁয়ে অবসর নিতে পারতেন অজি কিংবদন্তি। আর বোল্ট, নিজের শেষ দৌড়টা শেষ করলেন সতীর্থদের কাঁধে ভর দিয়ে। বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে ছিটকে গেলেন।
গোটা বিশ্বে নিজের বিদ্যুৎ গতির জন্যই পরিচিত তিনি। প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে রেসিং ট্র্যাকে রাজত্ব করেছেন। আটটি আলিম্পিক পদক (জামাইকান নেস্টা কার্টার ডোপ টেস্টে ধরা পড়ায় দলগত ভাবে জেতা একটি সোনা তাঁকে ফেরাতে হয়েছে) তাঁর ঝুলিতে। কিন্তু কখনও কখনও সম্রাটকেও নামতে হয় বাস্তবের রুক্ষ জমিতে। কয়েক দিন আগে ১০০ মিটারে ব্রোঞ্জ পেয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল। আর যে দৌড়টিকে তাঁর শেষ দৌড় বলে অভিহিত করা হয়েছিল, লন্ডনে অনুষ্ঠিত বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ৪X১০০ মিটার রিলে দৌড় শেষ করতেই পারলেন না উসেইন লিও বোল্ট। বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পাওয়ায় সতীর্থদের কাঁধে ভর দিয়ে ফিনিশিং লাইন কোনওরকমে ছুঁলেন তিনি।
হয়ত এটাই ভবিতব্য ছিল। গ্রেট ব্রিটেনের খেলোয়াড় যখন প্রথম হয়ে ফিনিশ লাইন পার করলেন তখন ট্র্যাকে শুয়ে কাতরাচ্ছেন বোল্ট। যে রেসিং ট্র্যাক তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দিয়েছিল, বসিয়েছিল কিংবদন্তির আসনে। সেই ট্র্যাকই যেন এক লহমায় কেড়ে নিল সবকিছু। স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ৬০ হাজার দর্শক গ্রেট ব্রিটেনের জয়ে আনন্দ করা তো দূর, বোল্টের পড়ে যাওয়া দেখে সবাই অবাক হয়ে পড়েন। রেস ততক্ষণে শেষ, তবুও হুইলচেয়ারে করে বেরোতে নারাজ তিনি। সতীর্থদের কাঁধে ভর দিয়ে পেরোলেন ফিনিশিং লাইন। তারপর দর্শকদের অভিবাদন গ্রহণ করে ফিরে যান টানেলে। এদিন বোল্টের জামাইকা ছিটকে গেলেও তাদের বরাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী আমেরিকা সোনা জিততে পারেনি। ১০০ মিটার চ্যাম্পিয়ন জাস্টিন গ্যাটলিন-সহ আমেরিকাকে হারিয়ে সোনা পকেটে পুরে নেয় গ্রেট ব্রিটেন। দ্বিতীয় হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় আমেরিকাকে। তৃতীয় হয়েছে জাপান।
এভাবে বোল্টের রেস শেষ হওয়ায়, মন ভেঙেছে তাঁর কোটি কোটি সমর্থক থেকে শুরু করে ক্রীড়াদুনিয়ার অন্যান্য ব্যক্তিত্বদেরও। অনেকেই টুইট করে বোল্টকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন, কেউ আবার দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, বোল্টের মতো কিংবদন্তির এভাবে কেরিয়ার শেষ হওয়াটা উচিত ছিল না। কেউ লেখেন, ‘গুডবাই বোল্ট’। আর বোল্টের চির-প্রতিদ্বন্দ্বী জাস্টিন গ্যাটলিন বলেন, ‘এর পরেও বোল্ট-ই বিশ্বের সেরা অ্যাথলিট।’ পরে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে বোল্টের টুইট, ‘আমার সমস্ত ফ্যানেদের অসংখ্য ধন্যবাদ।’