অর্ণব আইচ: পাকিস্তানের (Pakistan) আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে কলকাতার বাসিন্দার হোয়াটসঅ্যাপ (WhatsApp) অ্যাকাউন্ট হ্যাক। সম্প্রতি কলকাতায় পরপর দু’টি হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট হ্যাকের ঘটনা ঘটেছে কলকাতায়। এই ঘটনায় দ্বিতীয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করলেন লালবাজারের (Lal Bazar) সাইবার শাখার আধিকারিকরা। কয়েক মাস আগেই ছেলের সহপাঠীর বাবা বলে পরিচয় দিয়ে এক স্কুলছাত্রের অভিভাবকের কাছ থেকে ৬ লাখ টাকা তুলে নেয় ওই সাইবার জালিয়াত।
এছাড়াও হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাকের আরও একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে কলকাতায়। পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র এই ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের প্রত্যেকটি থানা ও গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকদের সতর্কও করেছেন। হোয়াটসঅ্যাপ হ্যাক করে ৬ লাখ টাকা হাতানোর ঘটনায় প্রথমে জয় প্রতিদার নামে এক ব্যক্তিকে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর থেকে গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেন। তাঁর ভাই দর্শন প্রতিদারকে নোটিস দিয়ে ডেকে পাঠায় লালবাজার। জেরার মুখে তিনি এই ঘটনার ব্যাপারে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। দর্শনকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে তাঁকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
[আরও পড়ুন: তালিবানি শাসনে ‘স্বাধীনতা’ হরণ, Afghanistan-এর স্বাধীনতা দিবসে হা-হুতাশ কলকাতার আফগানিদের]
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েক মাস আগে কলকাতার এক ব্যবসায়ীর কাছে হোয়াটসঅ্যাপে একটি মেসেজ আসে। তাঁর ছেলে কলকাতায় একটি স্কুলের ছাত্র। হোয়াটসঅ্যাপ প্রেরকের ডিপিতে ছিল তাঁর ছেলের সহপাঠীর বাবার ছবি। মেসেজে বলা হয়, তাঁর আত্মীয় আমেরিকার হাসপাতালে ভরতি। চিকিৎসার জন্য প্রচুর টাকা দরকার। ব্যবসায়ীকে টাকা দিয়ে সাহায্য করার অনুরোধ জানানো হয়। পাঠানো হয় একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর। ওই ব্যবসায়ী প্রেরককে তাঁর ছেলের সহপাঠীর বাবা মনে করে দু’দফায় ওই অ্যাকাউন্টে চার লাখ ও দু’লাখ টাকা পাঠান।
গত জুন মাসে ব্যবসায়ীর সঙ্গে তাঁর ছেলের সহপাঠীর বাবার দেখা হয়ে যায়। তাঁর কাছে আত্মীয়র অসুস্থতা সম্পর্কে খোঁজ নিতে গিয়েই পর্দাফাঁস হয়। তিনি কোনও টাকাও চাননি। অথচ তাঁর ছবি দিয়ে হোয়াটস অ্যাপের ডিপি তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, তদন্ত শুরু করে গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, পাকিস্তানের আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে ওই ব্যক্তির হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর হ্যাক করে এই জালিয়াতি করে অভিযুক্ত। যে পদ্ধতি ও ম্যালওয়্যারের সাহায্যে সেটি হ্যাক করা হয়, গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন। তবে ধৃত দুই ভাই যে এই প্রযুক্তি নিয়ে অনেকদিন ধরেই কাজ করছে, তা পুলিশকে জানিয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার দুই ভাই এভাবে কতজনকে প্রতারণা করেছেন, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।