নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সরকারের প্রশংসা করলে মিলবে পুরষ্কার। পাশাপাশি সমালোচনা করলে রাষ্ট্রের কোপে পড়তে হবে সোশাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের। এক্ষেত্রে প্রশংসায় যেমন মিলবে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরষ্কার, তেমনই সমালোচনায় যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকারের এই নীতির তীব্র বিরোধিতা করল প্রেস ক্লাব।
যোগী সরকারের এই নীতির তীব্র বিরোধিতা করে প্রেস ক্লাবের তরফে স্পষ্ট ভাবে জানানো হয়েছে, যে নীতি উত্তরপ্রদেশ সরকার নিয়েছে তা সরাসরি বাক স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকারকে লঙ্ঘন করে। এমনকী যে আইনকে হাতিয়ার করে যোগী সরকার এই নীতি প্রণয়ন করছে সেই আইনের সমালোচনা করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। অভিযোগ করা হয়েছে, এই নীতি সৎ সাংবাদিকতার বিরোধী। সরকার চাইছে এভাবে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করতে। এর আগেও উত্তরপ্রদেশের সঠিক তথ্য তুলে ধরার জেরে রাষ্ট্রের কোপে পড়তে হয়েছিল সাংবাদিককে। এবার নির্ভীক সাংবাদিকতার গলা টিপতে নির্লজ্জ পদক্ষেপ নিচ্ছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।
[আরও পড়ুন: জুম্মার নমাজে ২ ঘণ্টার বিরতি বাতিল, বিতর্ক জিইয়ে বড় সিদ্ধান্ত অসম বিধানসভায়]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সোশাল মিডিয়া নিয়ে নয়া নীতি নিয়েছে যোগীর মন্ত্রিসভা। যেখানে বলা হয়েছে সরকারের জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি কেউ যদি ফেসবুক, ইস্টাগ্রাম, এক্স হ্যান্ডেলে প্রচার করেন সেক্ষেত্রে সেই সোশাল মিডিয়া প্ল্যার্টফর্মগুলিকে সরকারি বিজ্ঞাপন দিয়ে উৎসাহ দেবে সরকার। এই তালিকায় থাকবে ইউটিউবও। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সোশাল মিডিয়া প্ল্যার্টফর্মের জনপ্রিয়তাকে মাথায় রেখে মাসে ৩০ হাজার টাকা থেকে ৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পুরষ্কার দেওয়া হবে। এই তালিকায় থাকবে ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমগুলিও।
অন্যদিকে, সোশাল মিডিয়াতে কেউ যদি অপপ্রচারবা গুজব ছড়ান সেক্ষেত্রে শাস্তির বিধানও দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে যোগী সরকারের সিদ্ধান্ত, কেউ যদি দেশবিরোধী কোনও কনটেন্ট, ভিডিও, ছবি বা কার্টুন সোশাল মিডিয়ায় প্রচার করেন সেক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩ বছর থেকে যাবজ্জীবন পর্যন্ত সাজা হতে পারে অভিযুক্তের। পাশাপাশি অশালীন বা ভয়-ভীতি সংক্রান্ত কনটেন্ট প্রচার করেন সেক্ষেত্রেও একই সাজার বিধান রয়েছে। শীঘ্রই এই বিষয়ে বিধানসভায় আইন আনবে যোগী সরকার।
[আরও পড়ুন: মারাঠা অস্মিতায় আঘাত, মূর্তি ভাঙায় শিবাজির পায়ে মাথা ঠেকিয়ে ক্ষমাপ্রার্থী মোদি]
স্বাভাবিকভাবেই যোগী সরকারের এই ডিজিটাল নীতি চরম বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এই নীতি প্রণয়ন করে সরকার সব রকম সমালোচনাকে দমন করতে চাইছে। এক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে একদিকে যেমন 'ঘুষ' অন্যদিকে তেমনই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই নীতির সমালোচনা করে মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি বলেন, 'যোগী সরকার নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই প্রকল্প শুরু করেছে। মিথ্যে প্রশংসা করার জন্য ৮ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে। আর আপনি যদি বস বা দলের বিরোধিতা করেন তবে আপনাকে দেশ বিরোধী বলে জেলে পাঠানো হবে। একইসঙ্গে বিজেপির আইটি সেলের লোকেরা আপনার ট্যাক্সের টাকায় নিজের পরিবার চালাবে।