বিক্রম রায়, কোচবিহার: উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ বিপর্যয়ের (Tunnel Accident) পর ৮ দিন কেটে গেলেও বিপদ কাটেনি। সুড়ঙ্গের যে তিমিরে ছিলেন ৪১ জন শ্রমিক, সেই তিমিরেই রয়েছেন। এর মধ্যে তিনজন বাংলার (West Bengal)। ঘরের ছেলেদের ঘরে ফেরার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে অসহায় পরিবারগুলি। প্রশাসন জানাচ্ছে, বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে খোঁড়াখুঁড়ির পর তাঁদের কাছে পৌঁছতে আরও ২ দিন সময় লাগবে। ফলে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। বিপর্যয়ের খবর পাওয়ার পর থেকেই চিন্তায় চিন্তায় দিন কাটছে কোচবিহারের (Cooch Behar) শ্রমিক মানিক তালুকদারের পরিবারের।
তুফানগঞ্জের বলরামপুরের বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের মানিক তালুকদার। পেশায় তিনি ইলেকট্রিক মিস্ত্রি। মাস ছয়েক আগে হায়দরাবাদের (Hyderabad) একটি ইঞ্জিনিয়ারিং সংস্থার সঙ্গে কাজের চুক্তি হয় তাঁর। উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীতে যে সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে, সেই কাজে যান মানিক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন হুগলির দুই শ্রমিকও। সকলে মিলে সুড়ঙ্গে কাজ করতে নামার পর সেখানে ধস নামে। আটকে পড়েন মোট ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধার দূর অস্ত, বাইরে থেকে কোনওভাবে ভিতরে পর্যন্ত পৌঁছতে পারছেন না কেউ। আটকে পড়া শ্রমিকদের সুস্থ রাখতে জল, খাবার পাঠানো হচ্ছে সুড়ঙ্গ পথে। তাতে আপাতভাবে সুস্থ থাকলেও এতদিন ধরে একফোঁটা সূর্যের আলো দেখতে না পেয়ে মনমরা হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। তাই রবিবার থেকে তাঁদের অ্যান্টিডিপ্রেশন ওষুধ, ভিটামিনও পাঠানো হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: শিয়রে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন, শহর থেকে প্যান্ডেলের বাঁশ খোলার ডেডলাইন দিল পুরসভা]
এসব খবরেও স্বস্তিতে নেই শ্রমিক পরিবারগুলি। আর কতদিনের অপেক্ষা? কবে অন্ধকার থেকে আলোয় ফিরবেন তাঁরা? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে কোচবিহারের তালুকদার পরিবার। মানিকের মা দিনভর ছেলের ছবি নিয়ে বসে রয়েছেন। ছেলে, ভাইপোরা বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করছেন। ছেলে মণি জানান, ৬ মাস আগে বাবা গিয়েছিলেন কাজ করতে। ২০-২৫ হাজার টাকা বেতনে এই কাজে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু এ কী বিপদে পড়লেন? ভাইপো বিনয় জানাচ্ছেন, সেই ৮ দিন আগেই যোগাযোগ হয়েছিল, তার পর থেকে আর খবর নেই। কেমন আছেন, কীভাবে আছেন কিছুই জানা যাচ্ছে না। বলরামপুর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বিক্রম অধিকারী এর মধ্যে তাঁদের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সবরকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। তবু আশঙ্কা কাটছে কই? বরং সুড়ঙ্গের অন্ধকারের মতো তালুকদার বাড়িতেও যেন আঁধার ঘনাচ্ছে।
দেখুন ভিডিও: