সংবাদ প্রতিদিনি ডিজিটাল ডেস্ক: একাধিক বিভাগে টানাপোড়েনের জের। রাতভর হাসপাতালের বাইরেই পড়ে রইল ক্যানসার আক্রান্ত কিশোর। সকালেও তাকে ভরতি নেওয়ার তেমন উদ্যোগ দেখাল না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এমন অমানবিক ঘটনায় কাঠগড়ায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে খবর হতেই টনক নড়ে সুপারের। তাঁর উদ্যোগে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভরতি হয় কিশোর। কিন্তু এমন এক সংকটজনক রোগীকে কেন এতক্ষণ ফেলে রাখা হল, তা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে অত্যন্ত তৎপর হয়ে কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর সরকার। আট বছরে উন্নতির পথে নিয়ে গিয়েছেন সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো। বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবাও চালু হয়েছে সরকারি হাসপাতালগুলিতে। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একাধিক নিয়ম পালনের পর নয়, সঙ্গে সঙ্গে রোগীকে ভরতি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করার নির্দেশ রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। সেসব নির্দেশ ঠিকমতো পালন করা হচ্ছে কি না, তার জন্য নজরদারিও চলে। কিন্তু এসবের পরও পরিস্থিতির যে খুব কিছু উন্নতি হয়, তা স্পষ্ট বৃহস্পতিবার সকালের একটি ঘটনায়।
[আরও পড়ুন: ভিনরাজ্যে নিয়োগে ইংরাজি-হিন্দিতে ভরসা, বিতর্কিত বিজ্ঞাপন নিয়ে বিবৃতি সেনকো গোল্ডের]
বীরভূমের এক কিশোর শুকদেব মাল, ক্যানসারে আক্রান্ত। বেঙ্গালুরুতে গিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে। কিন্তু পরিবার খুব একটা স্বচ্ছল নয়।তাই অত দূরে চিকিৎসার খরচ বহন করার সাধ্য নেই। তাই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। বীরভূম থেকে শুকদেবকে নিয়ে আসা হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার সন্ধে নাগাদ সে হাসপাতালে পৌঁছায়। কোনওক্রমে একটি স্ট্রেচারে মিললেও, ঠাঁই হয় না হাসপাতালের কোনও বেডে। সারারাত বাইরেই পড়ে থাকে শুকদেব। ভরতির কথা শুনে জরুরি বিভাগ দায় ঠেলে দেয় অঙ্কোলজির দিকে। অঙ্কোলজি জানায়, এভাবে ভরতি নেওয়া সম্ভব নয়। এভাবেই কেটে যায় গোটা রাত, এমনকী সকালের অনেকটা সময়ও।
এদিকে বছর পনেরোর শুকদেব খোলা আকাশের নিচে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকে। কিন্তু তবু কেউ তাকে ভরতি নিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। অসহায় বোধ করেন মা, বাবাও। একটি বেডের জন্য এদিক থেকে ওদিক দৌড়তে থাকেন তাঁরা। সুরাহা হয় না কিছুই। সরকারি হাসপাতালের এমন অমানবিক দৃ্শ্য চোখে পড়ায় সংবাদমাধ্যমগুলি এই খবর সম্প্রচার করতে থাকে। তারপরই টনক নড়ে মেডিক্যাল কলেজের সুপারের। তিনি বিষয়টিতে নজর দেন। তাঁরই উদ্যোগে দুপুরের পর হাসপাতালে ভরতি হয় শুকদেব। শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু এতক্ষণ সময় একজন ক্যানসার রোগীকে এভাবে পড়ে থাকতে হল কেন? এই প্রশ্নের সরব সব মহল।
[আরও পড়ুন: ‘মৌচাকে হাত দেবেন না’, চন্দ্রিমাকে কড়া হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের]
The post রাতভর হাসপাতালের বাইরেই ক্যানসার আক্রান্ত, শোরগোল কলকাতা মেডিক্যালে appeared first on Sangbad Pratidin.