ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: শান্তিনিকেতনের ছাতিমতলায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী পৌষ উৎসব। বৃহস্পতিবার সকালে উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে তার সূচনা করে দিলেন বিশ্বভারতীর (Vishva Bharati) উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে এ বছর পৌষমেলা (Poush Mela) না হওয়ার জন্য তিনি পরোক্ষে দায়ী করলেন রাজ্য সরকারকে। এদিন সকালে সূচনা বক্তৃতায় প্রথমে পৌষমেলা না করতে পারার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন তিনি। তারপরই রাজ্য সরকারের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। সরকারের অসহযোগিতার অভিযোগ তোলেন। যা নিয়ে দিনের শুরুতেই তৈরি হল বিতর্কের আবহ।
পৌষমেলা নয়, এ বছর বিকল্প মেলা হচ্ছে শান্তিনিকেতনে (Santiniketan)। একাধিক টানাপোড়েনের মাঝে শেষমেশ এই বিকল্প মেলাতেই সিলমোহর দেয় বিশ্বভারতী। বৃহস্পতিবার থেকে পৌষ উৎসবের সময়ই চলবে হস্তশিল্পের এই মেলা। কিন্তু এ বছর ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে দোষারোপের সুর শোনা গেল বিশ্বভারতী উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর গলায়। বৃহস্পতিবার পৌষ উৎসবের সূচনা পর্বে ছাতিমতলায় অনুষ্ঠানে এই অভিযোগ করেন উপাচার্য। তিনি বলেন, ”করোনা (Coronavirus) কালে পৌষমেলা করতে চেয়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবের কাছে প্রথমে লিখিত আবেদন করা হয়। পরে তিনবার চিঠি দিয়ে অনুমতি চাওয়া হয়। কিন্তু আজও তার কোন উত্তর আসেনি, তাই মেলা করা গেল না। এর জন্য আমি অত্যন্ত ব্যথিত।”
[আরও পড়ুন: নির্বাচনী হলফনামায় ‘ভুল’ তথ্য, বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বিরুদ্ধে সমন জারি]
উপাচার্য এদিন আরও বলেন, ”পৌষমেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল অক্টোবর মাস থেকে। এর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিতে হয়। যখন অনুমতির জন্য ওই চিঠি কেন্দ্রে পাঠায় তখন তারা জানায় বিশ্বভারতী এই বিষয়ে রাজ্যকে চিঠি দিক। কারন কোভিড (COVID-19) প্রোটোকল রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুসারে ঠিক হয়। এই পরের রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব কে চিঠি দেয় বিশ্বভারতী এবং জানতে চাই এই পরিস্থিতিতে কী করণীয়। অক্টোবরের গোড়াতে এই চিঠি দেওয়া হয়। পরে তিনবার রিমাইন্ডার দেওয়া হয় কিন্তু তার উত্তর আজও পাইনি বিশ্বভারতী। তখন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চিন্তায় পড়ে যায় এই ভেবে যে এই পরিস্থিতিতে পৌষ মেলা আয়োজন করা কতটা যুক্তিযুক্ত। শেষ মুহূর্তে ঠিক করা হয়, বিশ্বভারতী এবার পৌষমেলা করতে পারবে না।”
[আরও পড়ুন: Haldia IOC Fire: ৩ মৃত শ্রমিকের পরিবারের পাশে আইওসি কর্তৃপক্ষ, ১০ লক্ষ টাকা দেওয়ার আশ্বাস]
উপাচার্যের এই অভিযোগের পালটা জবাব দিয়েছেন বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)। তাঁর মন্তব্য, ”উনি এখন চালাকি করছেন। মেলা করতে চেয়ে শ্রীনিকেতন-শান্তিনিকেতন উন্নয়ন পর্ষদ এবং বোলপুর পুরসভা বিশ্বভারতীকে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বভারতী তার কোনও উত্তর দেয়নি। এখন মিথ্যা কথা বলছেন।”
দেখুন ভিডিও: