সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জার্সি গায়ে চাপিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা আহামরি কিছু নয়। ১টি টেস্ট খেলার পাশাপাশি এখনও পর্যন্ত ৩টি ওডিআই এবং সমসংখ্যক টি-টোয়েন্টি খেলেছেন মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)। তবে এত কম সময়েই ভারতীয় সাজঘরে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন বাংলার (Bengal) এই জোরে বোলার। আর সেইজন্য ২৯ বছরের মুকেশের ওয়ার্ক এথিক্সে মজেছেন দলের বোলিং কোচ পারশ মাম্বরে (Paras Mhambrey)। শনিবার অর্থাৎ ১২ আগস্ট ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) বিরুদ্ধে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবে হার্দিক পাণ্ডিয়ার (Hardik Pandya) দল। এর আগে সাংবাদিক বৈঠকে এসে মুকেশকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে গেলেন জাতীয় দলের প্রাক্তন জোরে বোলার।
মুকেশের প্রসঙ্গ উঠতেই পারশ মাম্বরে বলেন, “মুকেশ খুব কম সময়ে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে। মাঠে ও মাঠের বাইরে মুকেশের ওয়ার্ক এথিক্স দারুণ। একজন পেশাদার ক্রিকেটারকে সফল হতে গেলে বেশ কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হয়, সঙ্গে মেনে চলতে হয় ওয়ার্ক এথিক্স। মুকেশের মধ্যে এই ব্যাপারগুলো আছে।” এমনকি খুব কম সময়ে মুকেশ আন্তর্জাতিক মঞ্চের চাপ নিতে শিখে গিয়েছে। সেটাও জানিয়ে দিলেন বোলিং কোচ। তিনি যোগ করেন, “মুকেশের ক্রিকেটীয় মাথা খুব পরিষ্কার। খেলা নিয়ে ওর ভাবনাচিন্তা তারিফ করার মতো।”
মুকেশ হলেন টি. নটরাজনের পর দ্বিতীয় ভারতীয় ক্রিকেটার, যিনি কোনও বিদেশি সফরে গিয়ে তিন ফরম্যাটেই অভিষেক ঘটালেন। ২০২০-২১ মরশুমে নেট বোলার হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন তামিলাড়ুর পেসার। বাকিটা ইতিহাস। সবাই জানেন। এবারের নির্বিষ ক্যারিবিয়ান সফরে মুকেশ ইতিহাস গড়লেন। লাল বলের পর এবার সাদা বলের বাকি দুই ফরম্যাটেও তাঁর গায়ে উঠল জাতীয় দলের জার্সি।
[আরও পড়ুন: হার্দিকদের মরণ-বাঁচন ম্যাচে ভিলেন হতে পারে বৃষ্টি, নজরে একাধিক ব্যাটার]
কিন্তু কেন মুকেশের তিন ফরম্যাটেই অভিষেক ঘটল? পারশ মাম্বরের প্রতিক্রিয়া, “প্রতিপক্ষ যেমনই হোক, বিদেশ সফরে অভিষেক ঘটিয়ে পারফর্ম করা কিন্তু মুখের কথা নয়। মুকেশের মধ্যে কোনও জড়তা দেখতে পাইনি। আর তাই আমার ধারণা আগামিদিনে মুকেশ তিন ফরম্যাটেই সাফল্য পাবে।”
ছেলে বড় ক্রিকেটার হতে পারে, ভারতীয় দলে সুযোগ পেতে পারে, কখনও এমনটা মনে করতেন না মুকেশের প্রয়াত বাবা কাশীনাথ সিং। গতবছর ব্রেন স্ট্রোকে মারা যান মুকেশের বাবা কাশীনাথ। নিজে ট্যাক্সি চালালেও, ছেলেকে সরকারি চাকরির জন্য পড়াশোনা করার কথা বলতেন। সেই ছেলেই এবার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করে চলেছেন।
বিহারের গোপালগঞ্জের কাকরকুণ্ডে জন্ম মুকেশের। অনূর্ধ্ব ১৯ পর্যায়ে বিহারের হয়ে প্রতিনিধিত্বও করেছেন। ছোট বেলায় স্বপ্ন দেখতেন আর্মিতে যোগ দেওয়ার। চেষ্টাও করেছিলেন। শারীরিক পরীক্ষায় তিন–তিনবার ব্যর্থ হন। ২০১২ সালে এক দুর্ঘটনার কবলে পড়েন মুকেশ। এরপর বাবা তাঁকে কলকাতায় এসে কাজ করার কথা বলেন। কলকাতায় এসে কাজ করার পাশাপাশি ক্রিকেট খেলাও চালিয়ে যান মুকেশ। সেখান থেকেই স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন। যে স্বপ্ন সবে কয়েকটা ধাপ পেরিয়েছে। এখনও অনেকটা পথচলা বাকি।