সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংগীত জগতে ফের এক নক্ষত্রপতন। চলে গেলেন বর্ষীয়ান সুরকার-গায়ক বাপি লাহিড়ী (Bappi Lahiri)। মুম্বইয়ের এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৬৯।
সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে মুম্বইয়ের ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালের ডিরেক্টর ড. দীপক নমযোশী জানিয়েছেন, বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন প্রবীণ সংগীত পরিচালক। একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। ভরতি হতে হয়েছিল ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে। সেখান থেকে সোমবার ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে ফের তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এরপরই তাঁকে ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। জানা গিয়েছে, সেখানেই মধ্যরাতে প্রয়াণ ঘটে প্রবীণ শিল্পীর। OSA তথা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিতে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: সুরের মৃত্যু হয় না, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের গানের ‘ইন্দ্রধনু’ চিরকাল থেকে যাবে বাঙালির সঙ্গে]
গত শতকের আটের দশকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জগতে পপ-ডিস্কো গানের যে জোয়ার এসেছিল তাঁর অন্যতম পুরোধা ছিলেন বাপি। ‘ডিস্কো ডান্সার’ (১৯৮২), ‘ডান্স ডান্স’ (১৯৮৭) হয়ে একের পর এক ছবিতে করা তাঁর সুর সেই সময়ের তরুণ প্রজন্মকে আন্দোলিত করেছিল। সেই সময়ের এক প্রতিনিধি হিসেবে বাপি লাহিড়ীর অবদান চিরকাল স্মরণীয় হয়ে হবে। সংগীতের সমসাময়িকতা যে তাঁর নাড়ির স্পন্দনে তা নতুন করে প্রমাণিত হয়েছিল ২০১১ সালে ‘ডার্টি পিকচার’ ছবিতে ‘উ লা লা’ গানের মধ্যে দিয়ে। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বুঁদ করে রাখার কোন জাদুক্ষমতায় বলীয়ান তিনি। তবে কেবল পপ বা ডিস্কো নয়, নরম রোম্যান্টিক গানেও যে তিনি অনন্য তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল কেরিয়ারের শুরুতে ‘চলতে চলতে’ (১৯৭৬) ছবিতে বাপির করা সুর থেকেই।
একেবারে ছোটবেলা থেকেই সাংগীতিক পরিবারে বেড়ে ওঠা। বাবা ও মা দু’জনেই ছিলেন সংগীত জগতের মানুষ। ৩ বছর বয়সে তবলা বাদক হিসেবে কেরিয়ার শুরু। ২০২০ সালে ‘বাগী ৩’ ছবিতে ‘ভাঙ্কাস’ গানটিই ছিল তাঁর শেষ কাজ। মাঝের দীর্ঘ সময়ে সুরকার তো বটেই, কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও যে অবদান তিনি রেখে গেলেন তা অবিস্মরণীয়। মঙ্গলবারের সন্ধ্যা কেড়ে নিয়েছিল প্রবাদপ্রতিম সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে। আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চলে গেলেন বাপি লাহিড়ীও। শোকের ছায়া আরও ঘন হল সংগীত জগতে।