দিপালী সেন: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ-সহ সার্বিক নিরাপত্তায় ভরসা কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ভিত্তিক প্রযুক্তি! এমনটাই উঠে এসেছে ইসরো (ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন)-র প্রতিনিধি দলের বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে। এআই-এর পাশাপাশি আরএফআইডি প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কেও ইসরোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। তবে, কোনও চূড়ান্ত পরিকল্পনা এখনই হয়নি বলে জানিয়েছেন যাদবপুরের অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ।
যাদবপুরের মেন হস্টেলে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনায় যখন তোলপাড় হচ্ছে, সেই সময়ই চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে অবতরণ করেছিল ইসরোর চন্দ্রযান ৩। সেই সাফল্যের রেশ টেনেই যাদবপুর ক্যাম্পাসকে র্যাগিংমুক্ত করতে উপযুক্ত প্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য ইসরোর চেয়ারম্যান এস সোমনাথের সঙ্গে কথা বলেছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তারই ফলস্বরূপ মঙ্গলবার যাদবপুরে আসেন ইসরোর দুই প্রতিনিধি। সেদিন মূলত ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেছিলেন তাঁরা। বুধবার ক্যাম্পাসের বাইরের মেন হস্টেল, সেখানে প্রথম বর্ষের পড়ুয়া মৃত্যুর ঘটনাস্থল এ-টু ব্লকের আশপাশ ঘুরে দেখেন তাঁরা। বুধবারের পরিদর্শনের তালিকায় ছিল, ক্যাম্পাসের মধ্যে থাকা নিউ বয়েজ হস্টেল, মহিলা হস্টেল, তিন নম্বর গেট, কর্মীদের আবাসন-সহ অন্যান্য জায়গা। সঙ্গে ছিলেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ, সহ-উপাচার্য অমিতাভ দত্ত-সহ অন্যান্য আধিকারিক, শিক্ষকরা। পরিদর্শন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আর এক দফা বৈঠক করে যাদবপুর ছেড়ে চলে যান ইসরোর প্রতিনিধিরা।
[আরও পড়ুন: রান্না পুজোর খাবার খেয়ে বিপত্তি! জ্বর-বমি নিয়ে আরাগবাগে অসুস্থ বহু]
জানা গিয়েছে, পরিদর্শন ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে সবকিছু খতিয়ে দেখে রিপোর্ট জমা দেবেন তাঁরা। যাদবপুরের ইলেক্ট্রনিক্স অ্যান্ড টেলি-কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক অমিত কোনার বলেন, “কিছু কৌশলগত পরিকল্পনা করা হবে। সেই মোতাবেক ক্যামেরা বা আরএফআইডি ভিত্তিক ব্যবস্থা হয়তো কার্যকর করা হবে। সবই কৃত্তিম বুদ্ধিমতা নির্ভর হবে হয়তো। তবে, কিছুই চূড়ান্ত হয়নি এখনও। প্রাথমিক স্তরে আলোচনা হচ্ছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টা সময়সাপেক্ষ।” জানা গিয়েছে, ইসরোর তরফে হস্টেলে ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তি লাগানো সম্ভব কি না খতিয়ে দেখা হবে। বাইরের কাউকে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রেও ফেসিয়াল রেকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা কতটা, ক্যাম্পাসের গেটে এআই ব্যবহারের পরিকাঠামো, ভিডিয়ো অ্যানালিটিক্স, টার্গেট ফিক্সিংয়ের পরিবেশ আছে কি না–এই সবকিছুই খতিয়ে দেখা হবে।
অন্তর্বর্তী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ বলেন, “স্পট ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ হয়েছে। এরপর রিকোয়ারমেন্ট অ্যানালিসিস করবে বিশ্ববিদ্যালয়। এটা একটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানকার চরিত্রের উপর নির্ভর করে আমরা কতটা কী করা সম্ভব তা বিশ্লেষণ করে দেখে ধাপে ধাপে এগোব। পরিকল্পনা মোতাবেক যেখানে ইসরোর সাহায্য প্রয়োজন হবে, তা আমরা জানাব।”