সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘মুন্নাভাই’, ‘থ্রি ইডিয়টস’, ‘সঞ্জু’ থেকে ‘পিকে’র মতো বহু সুপারহিট বলিউড সিনেমার নেপথ্যে বিধু বিনোদ চোপড়া (Vidhu Vinod Chopra)। আর সেই পরিচালকের সঙ্গেই কিনা লালকৃষ্ণ আডবানির বচসা বাঁধে! তাও আবার জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মধ্যস্থতা করতে এগিয়ে আসেন খোদ রাষ্ট্রপতি। এরপরই বলিউড পরিচালক আডবানির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির কাছে নালিশ জানান।
কী ঘটেছিল সেদিন? জীবনের প্রথম জাতীয় পুরস্কার নিতে দিল্লিতে গিয়েছিলেন বিধু বিনোদ চোপড়া। মঞ্চে উঠেই তৎকালীন রাষ্ট্রপতি নীলাম সঞ্জীব রেড্ডির কাছ থেকে পুরস্কার নেন পরিচালক। কথা ছিল, প্রত্যেক বিজয়ীদের নগদ ৪০০০ টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকার প্রতিই বেশি আগ্রহ ছিল তখন বিধুর। টাকার খামটা ছিল লালকৃষ্ণ আডবানির কাছে। তিনি তখন কেন্দ্রীয় তথ্য সম্প্রচার মন্ত্রী। তাঁর কাছ থেকে খামটা নিয়েই পরিচালক বুঝতে পারেন যে সেটা হালকা। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে দাঁড়িয়েই খামটা খুলে ফেলেন বিধু বিনোদ চোপড়া। এরপরই ঘটে বিপত্তি!
বলিউড পরিচালক দেখেন, খামের ভিতর একটা মানি অর্ডারের ফর্ম রয়েছে। যা কিনা ৭ বছর পর নগদ হিসেবে পাবেন তিনি। সেটা দেখেই রেগে যান। তৎক্ষণাৎ আপত্তি জানিয়ে লালকৃষ্ণ আডবানির কাছে জানতে চান, “কথার খেলাপ কেন হল? কেন ৪ হাজার নগদ দেওয়া হল না?” পাল্টা আডবানি তাঁকে বুঝিয়ে বলেন, “এই টাকা আগামী সাত বছর পর দ্বিগুন হবে।” কিন্তু সেকথা মানতে নারাজ বিধু। সঙ্গে নাছোড়বান্দাও। সেখানে দাঁড়িয়েই মানি অর্ডার ফেরত দিয়ে নগদ টাকা দেওয়ার প্রস্তাব জানান পরিচালক। বচসা দেখে এগিয়ে আসেন রাষ্ট্রপতি। তিনি জিজ্ঞেস করেন কী হয়েছে? পরিচালক বলেন, “নগদ টাকা দেওয়া হয়নি।”
[আরও পড়ুন: ‘জীতু আমাকে সোশাল মিডিয়ায় ব্লক করেছে’! দশমীতে বিষণ্ণতার পোস্ট দিয়েও বিস্ফোরক নবনীতা]
এরপর আডবানি বলেন, “পরদিন সকালে অফিসে এসে টাকাটা নিয়ে যেতে।” কিন্তুও তাতেও রাজি হননি বিধু। রাষ্ট্রপতিকে বলেন, “আগামিকাল টাকা না পেলে তাঁর দ্বারস্থ হবেন।” নীলাম সঞ্জীব রেড্ডি তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে বলেন আডবানি কথার অন্যথা করবেন না। পরেরদিন সকালেই বিধু পৌঁছে যান মন্ত্রীর অফিসে। আডবানি সোজা বলেন, “তোমার বাবার সঙ্গে কথা বলতে চাই। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে এটা কীধরণের ব্যবহার বিজেতার?” উত্তরে ‘থ্রি ইডিয়টস’ পরিচালক সোজা বলেন, “আপনি ব্রেকফাস্ট করেছেন। আমি করনি। এক বন্ধুর তেকে ১২০০ টাকা ধার নিয়ে এখানে এসেছি। জামা কিনেছি। এসি কোচে এসেছি। ফিরে তাঁকে আমি কীভাবে টাকা ফেরৎ দেব? ভেবেছিলাম এই নগদ টাকা থেকেই ওঁকে শোধ করে দেব।” একথা জানতে পেরেই আডবানি বিধু বিনোদ চোপড়াকে প্রাতঃরাশ করানোর পাশাপাশি নগদ অর্থও দেন। সম্প্রতি অতীতের সেই ঘটনাই এক প্রথমসারির সংবাদমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে জানান বলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক।