শম্পালী মৌলিক: প্রথমবার বড়পর্দায় জুটি বাঁধছেন বিক্রম চট্টোপাধ্যায় (Vikram Chatterjee) এবং দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy)। আদিত্য সেনগুপ্তর পরিচালনায় একসঙ্গে দেখা যাবে দু’জনকে। এটিই পরিচালক আদিত্যর প্রথম ছবি। সিনেমার নাম এখনও ঠিক হয়নি, তবে চিত্রনাট্যের কাজ শেষ।
আদিত্য সেনগুপ্তকে ইন্ডাস্ট্রি চেনে ‘বুশকা’ নামে। নায়ক হিসাবে প্রথম তিনি নজরে আসেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে। সেটা ২০১৭ সাল। মা খেয়ালি দস্তিদার আর অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায়ের পরিবারের সাংস্কৃতিক আবহে তাঁর বেড়ে ওঠা। লেখালিখি, থিয়েটার, অভিনয়, পরিচালনা বিষয়ে বরাবরই আগ্রহী ছিলেন আদিত্য। ‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এর আগে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন কয়েকটি ছবিতে। তবে সেই সময়েও বলতেন পরিচালনাই তাঁর জীবনের লক্ষ্য। ফলত, ‘প্রজাপতি বিস্কুট’-এর পর তাঁকে আর সেভাবে অভিনয়ে পাওয়া যায়নি। কিন্তু স্ক্রিপ্ট লিখেছেন, টেলিভিশন ও ওয়েবের জন্য কিছু পরিচালনার কাজও করেছিলেন। এবারে নিজের প্রথম ফিচার ফিল্ম তৈরি করতে চলেছেন।
রোডট্রিপ এবং একটি প্রেমের গল্প নিয়েই তৈরি হচ্ছে চিত্রনাট্য। খুব শিগগিরি শুটিং লোকেশন রেকি-তে যাচ্ছেন। আদিত্য বলছেন, “এটা প্রধানত বন্ধুত্বের গল্প। দু’জন মানুষ, যারা ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে বড় হয়েছে। একেবারে এই প্রজন্মের দু’টি ছেলেমেয়ে। এই সময়ে দাঁড়িয়ে তাদের মধ্যে ব্যবধানও তৈরি হয়েছে, কারণ তারা কর্মসূত্রে ভিন্ন শহরে। এই দু’জন মানুষ তাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ফিরে পাচ্ছে অনেক বছর পর। একটা জার্নিও রয়েছে এই অন্বেষণের পথে। একদম পিওর গল্প। যার সঙ্গে সব বয়সের লোকজন রিলেট করতে পারবে।”
ফিচার ফিল্ম বানানোর স্বপ্ন আদিত্যর অনেকদিনের। হেসে বললেন–”এটাই আমার অনেক দিনের লক্ষ্য ছিল। এখন যে সুযোগ পাচ্ছি তার জন্য আমি অত্যন্ত থ্যাঙ্কফুল এবং খুশি।” প্রসঙ্গত আদিত্যর বাবা দেবাংশু সেনগুপ্তর কাজেও একসময় মুগ্ধ ছিল টলিপাড়া। আর
নিজের প্রথম ছবির মুখ্য চরিত্র হিসেবে আদিত্য বেছে নিয়েছেন বিক্রম ও দিতিপ্রিয়াকে। বাকি অভিনেতা চূড়ান্ত হতে এখনও কিছুটা সময় লাগবে। বিক্রম এবং দিতিপ্রিয়া দু’জনেই খুব ভাল অভিনেতা, সেটাই তাঁদের নির্বাচনের ক্ষেত্রে মাথায় ছিল জানালেন নবীন পরিচালক। আর একটা কারণ হল, আদিত্যর ভাবা চরিত্রের সঙ্গে একেবারে মিলে গিয়েছেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: নিজের আবাসনে চূড়ান্ত হেনস্তা! কান্নায় ভেঙে পড়লেন শ্রীলেখা]
অভিনেতা বিক্রম সদ্য নিজের প্রথম হিন্দি ছবির কাজ শেষ করেছেন। এখন ওয়েব প্ল্যাটফর্মের একটি কাজে ব্যস্ত। তাঁর কথায়, “আদিত্যর সঙ্গে আমার পরিচয় অনেক দিনের। বেশ কয়েকবার কথা হয়েছে ছবি করার বিষয়ে। ফাইনালি এবার কাজটা হচ্ছে। বেশ সহজ গল্প অথচ লেয়ার আছে। আমার খুব ভাল লেগেছে চিত্রনাট্যটা।” ছবির শুটিং হবে কলকাতা ও সিকিম মিলিয়ে। এই বছরের শেষে ডিসেম্বরেই শুটিং শুরু। এই ছবির প্রযোজনায় রয়েছে সম্পূর্ণা লাহিড়ি ও রাহুল ভঞ্জর ‘স্মলটক আইডিয়াজ’ ও ‘কাশিস’। মিউজিক করবেন রণজয় ভট্টাচার্য।
ছবিটি মিউজিক্যাল না হলেও, ছবিতে আবহসংগীতের খুব বড় ভূমিকা রয়েছে। কারণ অনেক নীরব মুহূর্ত থাকবে, যেখানে মিউজিক গল্প এগিয়ে নিয়ে যাবে। অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়া বলেন, “এই ছবিটা বন্ধুত্ব আর ভালবাসা নিয়ে। আমি খুব খুশি বুশকার সঙ্গে কাজ করব বলে। ‘প্রজাপতি বিস্কুট’ ছবিতে বুশকা ছিল। আর আমিও ওই ছবিতে কাজ করেছিলাম। তার পরিচালিত প্রথম সিনেমায় আমি কাজ করতে চলেছি। একইসঙ্গে আমি খুব এক্সাইটেড বিক্রমের সঙ্গে কাজ করব বলে। যাকে আমি বহু বছর ধরে চিনি। একসঙ্গে এটা আমাদের প্রথম ফিল্ম হতে চলেছে। সিকিমের খুব সুন্দর লোকেশনে শুটিং হবে। আমার আশা দর্শক ছবিটা উপভোগ করবে।”
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই আদিত্যকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তাঁর প্রথম ফিচার ফিল্ম শুরুর আগে। প্রসঙ্গত, আদিত্য তাঁর বাবার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবেই প্রসেনজিৎকে চেনেন ছোট থেকে। তাই যে কোনও কাজ শুরুর আগে ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র হিসাবে তাঁর ‘বুম্বামামুর’ পরামর্শ নেন বুশকা। ছবি শুরুর আগে আশীর্বাদ চাইতে গিয়েছিলেন তাঁর কাছে। প্রসেনজিৎ নিরাশ করেননি জানালেন আদিত্য। এবার শুটিং শুরুর অপেক্ষা।