সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পুরো ফিট থাকলেও ইংল্যান্ডের (England) বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি (T-20) থেকে বাদ পড়েন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। টসের সময় ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলি (Virat Kohli) জানিয়েছিলেন বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে রোহিতকে। শেষমেশ রোহিতের অভাব ভাল ভাবেই টের পায় ভারত। প্রথমে ব্যাট করে মাত্র ১২৪ রান তোলে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। জবাবে খুব সহজেই টার্গেটে পৌঁছে আট উইকেটে জয় ছিনিয়ে নেয় ইংল্যান্ড। হঠাৎ রোহিতকে এভাবে বিশ্রাম দিতে দেখে গোটা ক্রিকেটবিশ্বর মতো স্তম্ভিত বীরেন্দ্র শেহওয়াগ (Virender Sehwag) এবং গৌতম গম্ভীরও (Gautam Gambhir)।
রোহিতকে না খেলানো নিয়ে গম্ভীরের প্রশ্ন, “এমন একটা নতুন সিরিজে কেন এমন সিদ্ধান্ত? সিরিজ হাতে আসার পর পরীক্ষা চলতে পারে। কিন্তু শুরুতে নয়। রোহিতের জায়গায় কেন শিখরকে আনা হবে? এই পরিকল্পনা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।” আরও একটি কারণে গম্ভীর মানতে পারছেন না । বলছেন, “শিখরকে দেখার কিছু নেই। পরীক্ষা যদি করতেই হয়, তা হলে সূর্যকুমার বা ঈশানকে দেখে নেওয়া যেতে পারত। তবে প্রথম ম্যাচে রোহিতকে বাইরে পাঠানো ভুল। ওদের আনতে হলে অন্য কাউকে বসানোর কথা ভাবতে পারত ম্যানেজমেন্ট।” সাদা বলের ক্রিকেটে রোহিতকে বিশ্রামের কথা কেন উঠল তার ব্যাখ্যা নেই।” তবে কি টানা দু’টি সিরিজ জেতার পর ভারতীয় দল মানসিক দিক থেকে কিছুটা রিল্যাক্স হয়ে পড়েছিল? টেস্টে ইংল্যান্ডকে মেপে টি ২০তে খেলতে নেমেছিল?
[আরও পড়ুন: মোতেরায় হার্দিকের এই দুর্দান্ত শটটির নামকরণ করতে পারবেন? সমর্থকদের প্রশ্ন ICC’র]
তাহলে ভারত হারল কেন? অনেকে বলছেন, টস হেরে ম্যাচে পিছিয়ে যেতে হয়। গম্ভীর ফুঁ মেরে এই তথ্য উড়িয়ে দিলেন। বললেন, “ টেস্টে টসের একটা ব্যাপার থাকে। প্রথম দিন বা তৃতীয় দিনের উইকেট এক হয় না। সেখানে আগে বা পরে ব্যাট করার যুক্তি থাকে। কিন্তু ৪০ ওভারের একটা ম্যাচে টস গুরুত্বপূর্ণ নয়। ভারত টসের জন্য হারেনি। প্রথম পাওয়ার প্লে-তে হেরেছে। ছ’ওভারের মধ্যে তিন উইকেট চলে যাওয়ায় পর ম্যাচ বেরিয়ে গিয়েছে। মানতে হবে, ইংল্যান্ড অনেক ভাল খেলেছে। ওদের উড, আর্চাররা ভাল গতিতে বল করেছে। ১৪০ থেকে ১৪৫ কিলোমিটার গতিতে বল করে ভারতকে চাপে রেখেছে। স্লগেও মারার সুযোগ দেয়নি। সঙ্গে চল্লিশ শতাংশ স্লোয়ার বল করে আটকে দিয়েছে ব্যাটসম্যানদের। ১২৪ রানে কোহলিদের আটকে ম্যাচ তখনই প্রায় জিতে গিয়েছে।”
ভারতও শুরুতে ইংল্যান্ডের গোটা কয়েক উইকেট তুলে নিতে পারলে ম্যাচ ঘুরে যেতে পারত। প্রথম ওভারে অক্ষরকে এনে কি ভুল করেছে? সুন্দরকে বল করতে আনলে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যেত? গম্ভীর মানছেন না। বলছেন,“ এ ব্যাপারে কোহলির ভুল দেখতে পাচ্ছি না। ডান হাতি ব্যাটসম্যানের সামনে অফ স্পিনারের থেকে বাঁহাতি স্পিনার আনা সঠিক সিদ্ধান্ত। পরের ম্যাচে ভারতের উচিত তিন স্পিনারে না গিয়ে সাইনির মতো গতিতে বল করা কোনও বোলারকে দলে আনা। তা হলে কিছুটা বদল হতে পারে। তবে সবার আগে রান করতে হবে। শুক্রবার ভারত ১৬০ করলে খেলার চেহারা অন্যরকম হত। ইংল্যান্ড সহজে জিততে পারত না।”
[আরও পড়ুন: সেই পুরনো চেনা ছন্দ, চেন্নাইয়ের নেটে একের পর এক ছক্কা ধোনির, দেখুন ভিডিও]
হঠাৎ রোহিতকে বিশ্রাম দিতে দেখে স্তম্ভিত বীরেন্দ্র শেহওয়াগও। কোহলির বিরুদ্ধে তোপ দেগে ক্ষিপ্ত শেহওয়াগ তাই তো বললেনও, “বুঝলাম না রোহিতকে কেন বিশ্রাম দেওয়া হল? একটা কথাই শুধু ভাবছি যে এই বিশ্রাম নেওয়ার নিয়মটা কি অধিনায়কের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য? আমি কোনওদিন বিরাটকে বলতে শুনিনি যে ও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য দু’তিন ম্যাচ খেলবে না। কারণ অধিনায়ক নিজে যদি বিশ্রাম না নেয় তা হলে সেই ব্যক্তি অন্যকে বিশ্রাম দেয় ঠিক কোন যুক্তিতে। ফলে ক্রিকেটাররা বিশ্রাম নেবে কী নেবে না সেটা তাদের উপরই ছেড়ে দেওয়া উচিত।”
বিস্ফোরণের এখানেই শেষ নয়। শেহওয়াগ আরও বললেন, “প্রশ্ন হল রোহিত দলে ফিরলে কি বিরাট বিশ্রাম নেবে? কারণ দেখছি বিরাট যখন-তখন ইশান্ত শর্মা, মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরাহর মতো ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।” রোহিত ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের অপরিহার্য অঙ্গ এমনটাই দাবি শেহওয়াগের। যিনি বললেন, “রোহিত শর্মা ফিট থাকলে ওকে সব সময় প্রথম একাদশে রাখা উচিত। মনে রাখতে হবে সমর্থকরা রোহিতের মতো ব্যাটসম্যানের খেলা দেখতেই মাঠে আসে। আমি নিজেও রোহিতের খুব বড় ভক্ত। রোহিত না খেললে আমি টিভি বন্ধ করে দিই।”