সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভ্রমণপিপাসুদের সামনে ইতিহাসের ভান্ডার উজার করে দেয় অজন্তা-ইলোরা। ঐতিহাসিক মনে আলোড়ন সৃষ্টি করে ইউনেসকো স্বীকৃত এই গুহা। কত অজানা ইতিহাস-শিল্প-শৈলী-পুরান কথা-চিত্রকলা লুকিয়ে রয়েছে এই দুই গুহার পরতে পরতে। গুহার আনাচে-কানাচেতে কোন অজানা রহস্য রয়েছে, তা একঝলকে চোখের সামনে তুলে ধরে এখানকার পর্যটন সেন্টার। অথচ জনপ্রিয় সেই দুই পর্যটন কেন্দ্রকে পর্যটকদের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহারাষ্ট্র সরকার।
প্রায় সারা বছরই এই দুই অদ্ভুত সৃষ্টির সাক্ষী থাকতে ভিড় জমান দেশ-বিদেশের পর্যটকরা। এর ভিতরই তৈরি হয়েছে দুটি কেন্দ্র। যেখানে স্থাপত্যের রেপ্লিকার মাধ্যমে গুহার ঐতিহ্য-ইতিহাস ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করা হয়। কিন্তু আপাতত অজন্তা ও ইলোরার সেই দুই কেন্দ্রকেই বন্ধ রাখছে মহারাষ্ট্র সরকার। অর্থাৎ কৈলাসের অপরূপ সৌন্দর্যের সাক্ষী থাকতে পারলেও অনায়াসে সেই গুহার বিষয়ে জেনে নেওয়া যাবে না। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত?
[আরও পড়ুন: শীতে কলকাতার কাছে চড়ুইভাতি সারতে চান? রইল তিনটি অফবিট জায়গার সন্ধান]
জানা গিয়েছে, ওই সেন্টারে অডিও-ভিজ্যুয়ালের মাধ্যমে স্থাপত্যের রেপ্লিকা দেখিয়ে গুহা দুটির ইতিহাসের প্রদর্শনী হত। সঙ্গে একটি গ্রন্থাগারও তৈরি হয়। ২০১৩ সালে যার জন্য ১২৫ টাকা খরচ করেছিল রাজ্য সরকার। দুই দফায় সেই অর্থ খরচ করা হয়েছিল। যার একটা বড় অংশ এসেছিল জাপানিস ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (JICA) থেকে। কয়েক বছর সব ঠিকঠাক চললেও গত বছর সেপ্টেম্বর সমস্ত পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়। জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণেই পরিষেবা বন্ধ করে দিতে হয়। আসলে জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহের খরচ বাবদ পাঁচ কোটি টাকা বকেয়া রয়ে গিয়েছে। সেই জন্যই বন্ধ সরবরাহ। কর্তৃপক্ষের তরফে বলা হয়েছে, “বর্তমানে বকেয়া পাঁচ কোটি। বকেয়া মেটানোর জন্য সরকারের কাজ থেকে পাঁচ-ছ’বার টাকা চেয়েছে মহারাষ্ট্র টুরিজম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (MTDC)। গত বছর আমরা পাঁচ কোটি পেয়েছিলাম। কিন্তু সে অর্থ তারও আগের বয়েকা মেটাতে শেষ হয়ে গিয়েছে।” সমস্ত বয়েকা মেটাতে অন্তত ১০ কোটি টাকা প্রয়োজন বলে জানা গিয়েছে।
পর্যটকদের জন্য গুহা চত্বরের এই দুই সেন্টার কতদিন বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় কর্তৃপক্ষ। এর রক্ষণাবেক্ষণের পিছনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে জাপান। আর শীতের মরশুমে পর্যটকদের সমাগম বেশি হয়। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অজন্তা-ইলোরার সেন্টার বন্ধ থাকলে সকলেরই ক্ষতি। তাছাড়া এমন ঘটনা দেশের ভাবমূর্তিতেও খারাপ প্রভাব ফেলবে। বিশ্ব বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হওয়া সত্ত্বেও এই দুই গুহার আশেপাশে সেভাবে ভাল ক্যাফেটেরিয়া, হোটেল, রেস্তরাঁও গড়ে ওঠেনি। বিশেষ করে অজন্তা গুহাচিত্র দেখতে বেশ কাঠখড় পোড়াতে হয় পর্যটকদের। কর্তৃপক্ষের দাবি, সরকার বিষয়টি নিয়ে কোনও ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপ করুক।
[আরও পড়ুন: বেনজির! ‘নিষিদ্ধ’ ভারতীয় গাড়ি নিয়ে কৈলাসে পাড়ি বঙ্গসন্তানের]
The post বকেয়া পাঁচ কোটি টাকা, বন্ধ ঐতিহাসিক অজন্তা-ইলোরার পর্যটন সেন্টার appeared first on Sangbad Pratidin.