ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: পাঁচদিন ধরে একাটানা ছাত্র আন্দোলনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে (Visva Bharati University) জারি অচলাবস্থা। বুধবার সকালে উপাচার্যের বাড়ির গেটের সামনে দুধ, কলা দিলেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। প্রতিদিনই এভাবে উপাচার্যকে দুধ, কলা দেওয়া হবে বলেই জানিয়েছেন তারা। এদিকে, ছাত্র আন্দোলনে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কেন্দ্রীয় অফিসের সামনের রাস্তার দু’টি গেটেই তালা দিয়ে দেওয়ার জন্য কোনও কর্মী কেন্দ্রীয় অফিসে যেতে পারেননি। তাই এদিন কর্মীদের বেতন এবং পেনশনভোগীদের পেনশন হয়নি বিশ্বভারতীতে।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি নিয়ে উপাচার্যের পৌরহিত্যে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধান-সহ আধিকারিকদের ভারচুয়াল বৈঠক হয়। উপাচার্য অভিযোগ করেন, ছাত্ররা কেন্দ্রীয় অফিসের দু’টি গেটে তালা দিয়ে দিয়েছে। তাই কোনও কর্মী কেন্দ্রীয় অফিসে ঢুকতে পারছেন না। ফলে আগস্ট মাসের বেতন ও পেনশন দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। প্রতিদিন যেভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে, তাতে ভরতি প্রক্রিয়া, পরীক্ষার ফলপ্রকাশ সম্ভব নয়। কর্তৃপক্ষ অধ্যাপকদের পাঠালেও আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীরা কোনও আলোচনা চায় না বলে বৈঠকে অনেকে অভিযোগ করেন।
[আরও পড়ুন: চাকরির নামে লক্ষ টাকার প্রতারণা! কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে দায়ের FIR]
যদিও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক বিশ্বভারতীকে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বলেই খবর। এই অবস্থায় এদিনই কর্মসমিতির জরুরি বৈঠক ডাকা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সেই বৈঠকে নেওয়া হতে পারে বলে সূত্রের খবর। এদিকে সময়মতো বেতন না মেলায় সমস্যায় পড়েন কয়েক হাজার কর্মী। ছাত্রদের অভিযোগ, আন্দোলন দেখে উপাচার্য ভয় পেয়ে গিয়েছেন। দু’টি গেটেই ভিতর থেকে তালা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ বাড়াতে উপাচার্য এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে রুষ্ট কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ চলতি পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। তারপরই মন্ত্রক থেকে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনা করতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু উপাচার্য এই বিষয়ে এখনও রাজি হননি বলে খবর। এদিকে বিশ্বভারতীর কেন্দ্রীয় অফিস যাওয়ার দু’টি গেটে কারা তালা মেরেছে, তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। এদিন দেখা যায়, কেউ বা কারা গেটের ভিতর দিক থেকে চেন দিয়ে তালা দিয়েছে। ছাত্রদের দাবি, কর্তৃপক্ষই এই তালা দিয়েছে বলে নিরাপত্তারক্ষীরা স্বীকার করেছেন। আর কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, তালা দিয়েছে ছাত্রছাত্রীরাই। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অনির্বাণ সরকার কিছু বলতে অস্বীকার করেন।