ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: লাগাতার ছাত্র বিক্ষোভ, আন্দোলন, পড়াশোনার পরিবেশে আঘাত – ধারাবাহিক ঘটনায় প্রশাসনিক চাপের মুখে পড়ে পদত্যাগ করলেন বিশ্বভারতী (Vishva Bharati) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়াল। মঙ্গলবার তিনি ইস্তফাপত্র পাঠিয়েছেন উপাচার্যের (VC) কাছে। এই খবর জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক। তাঁর এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে বিশ্বভারতীর আভ্যন্তরীণ সমস্যার সমাধানের পথ আরও জটিল করে তুলল বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের। রেজিস্ট্রারের সিদ্ধান্তে বিস্মিত পড়ুয়ারাও।
বিশ্বভারতীর রেজিস্ট্রার আশিস আগরওয়ালের উপর বেশ কয়েকদিন ধরেই নানা চাপ চলছিল। মার্চের গোড়ায় নিজেদের দাবি আদায়ে রেজিস্ট্রারকে ঘেরাও করেন ছাত্রছাত্রীরা। ঘেরাও হন অন্যান্য আধিকারিকরাও। রেজিস্ট্রার ঘর থেকে বেরতে চাইলেও তাঁকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই অবস্থায় তিনি প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কাও করেছিলেন সাংবাদিকদের কাছে। বলেছিলেন, ”আমাকে অন্যায়ভাবে ওরা বন্দি করে রেখেছে। এটা সম্পূর্ণ ভুল পদ্ধতি। এতজন ঘরের বাইরে বসে রয়েছে, বেরতেই পারছি না। প্রাণ সংশয় হচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘ইসলামে হিজাব বাধ্যতামূলক নয়’, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক বিতর্কে রায় কর্ণাটক হাই কোর্টের]
এরপর আন্দোলন খানিকটা শিথিল করে ঘেরাওমুক্ত হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে পড়াশোনার পরিবেশ ফেরাতে রেজিস্ট্রার বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, উপাচার্য তাঁর এই পরিকল্পনাকে সমর্থন করেননি। তাঁকে বারবার প্রশাসনিক কাজে বাধা দিচ্ছেন। আর সেই কারণেই আন্দোলনের আঁচ নিভিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক করা যাচ্ছে না বলে মত তাঁর। আর এসবের চাপে পড়েই রেজিস্ট্রারের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় স্ত্রীকে দেখে ফেলার মাশুল, ধারালো অস্ত্রের কোপে মৃত্যু যুবকের]
এদিকে, মঙ্গলবার সকালেই পরীক্ষার্থীদের জন্য নিয়ম শিথিল করে আগের নোটিস প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ। অনলাইন ক্লাস করে অফলাইনে পরীক্ষা দিতে নারাজ ছিলেন পরীক্ষার্থীরা। আন্দোলনের এটাও একটা কারণ ছিল। আগে নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল, যারা নির্দিষ্ট পরীক্ষা সূচি অনুসারে পরীক্ষা দেবে না, তাদের ফাইনালের রেজাল্টে ‘ব্যাক’ হিসাবে দেখানো হবে। পরে চাপের মুখে পড়ে এই নোটিস প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু তার ঠিক পরপরই রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ ঘিরে জটিলতা আরও বাড়ল।