ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ছাত্র আন্দোলনে উত্তপ্ত বিশ্বভারতী (Visva Bharati University)। গত শুক্রবার থেকে ছাত্র আন্দোলনে গৃহবন্দি উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে সোমবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, উপাচার্য অ্যাডমিশন কমিটির চেয়ারম্যান। তাই তিনি অফিসে না আসার কারণে ছাত্রছাত্রীদের ভরতি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হল। এছাড়া বিশ্বভারতীর বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।
এদিকে, সোমবার সকালে গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিশ্বভারতীর উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে উত্তেজনা ছড়ায়।গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চের সদস্যদেরও অভিযোগ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ‘যথেচ্ছাচার’ করছেন। তারই প্রতিবাদে ছাত্রছাত্রীরা প্রতিবাদ-আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। তবে তা সত্ত্বেও উপাচার্য কেন নিশ্চুপ, কেন উপাচার্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলছেন না, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেন গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা। উপাচার্যের আচরণের প্রতিবাদে সোমবার মিছিল শেষে তাঁর বাসভবনের সামনে একটি ব্যানার টাঙাতে যায়। তাতেই বাধা দেয় নিরাপত্তাকর্মীরা। দু’পক্ষের বচসায় রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উপাচার্যের বাসভবন চত্বর। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে আপাতত ভরতি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
[আরও পড়ুন: ২৮ সেকেন্ডে ভরতনাট্যমের ৫২টি হস্তমুদ্রা প্রদর্শন! ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে নাম বাংলার খুদের]
উল্লেখ্য, বিশ্বভারতীর প্রায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে ইতিমধ্যেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সাসপেনশন বর্ধিত করা হয়। তারা সাসপেন্ড থাকাকালীন তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী (Bidyut Chakrabarty) বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘যথেচ্ছাচার’ করছেন।
তারই প্রতিবাদে শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করেন পড়ুয়ারা। সেখানে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে একপ্রস্থ তর্কাতর্কিতেও জড়িয়ে পড়েন পড়ুয়ারা। পরে উপাচার্যের বাসভবন ‘পূর্বিতা’ ঘেরাও করেন তারা। আন্দোলনরত পড়ুয়াদের হাতে ছিল প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা, ‘তালিবান উপাচার্য দূর হটো’। শুক্র এবং শনিবার রাতভর ঘেরাও উপাচার্য। রবিবারও দিনভর জারি ছিল পড়ুয়াদের আন্দোলন।
সোমবার সকালে গণতান্ত্রিক নাগরিক মঞ্চের তরফে একটি মিছিল করা হয়। মিছিল শেষে ব্যানার টাঙানো নিয়ে তৈরি হয় উত্তেজনা। উপাচার্য পড়ুয়াদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বদল না করলে আন্দোলন জারি থাকবে বলেই দাবি আন্দোলনকারীদের। এদিকে, অশান্তির আশঙ্কায় আঁটসাঁট নিরাপত্তায় মুড়েছে উপাচার্যের বাসভবন। ‘পূর্বিতা’র আশেপাশে লাগানো হয়েছে সিসিটিভি। আগে ৯টি সিসিটিভি লাগানো হয়েছিল। শনিবার আরও ৯টি লাগানো হয়েছে।
দেখুন ভিডিও: