ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি নির্মাণ ভেঙে নিজেদের জায়গা নিজেদের দখলে নেওয়ার অভিযান শুরু করেছে। কিন্তু এর মধ্যেই বিশ্বভারতীর দখলে থাকা বিভিন্ন প্লট নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। জেলা ভূমি দপ্তর জানিয়ে দিয়েছে, পূর্বপল্লি, দক্ষিণপল্লি ও আশ্রম এলাকায় প্রায় ২০০ প্লটের মধ্যে বড় অংশের বিশ্বভারতীর নামে রেকর্ড থাকা নিয়ে বিতর্ক আছে। এমনকী উপাচার্যের বাংলো যে প্লটে রয়েছে তারও বিশ্বভারতীর নামে রেকর্ড থাকা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য হয়ে আসার পরে এই বিষয়টি নবান্নে সর্বোচ্চ স্তরে জানানো হয়েছে এবং রেকর্ডে না থাকা জায়গাগুলি রেকর্ড করানোর কাজ শুরু হয়েছে।
বিশ্বভারতী এবং জেলা ভূমি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৪ বর্গকিলোমিটারের বেশি এলাকাজুড়ে বিশ্বভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। পূর্বপল্লি, দক্ষিণপল্লি ও আশ্রম এলাকায় বিশ্বভারতীর ৭৭টি প্লটের রেকর্ড নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এর মধ্যে ৬৫টি প্লট পূর্বপল্লি ও দক্ষিণপল্লিতে এবং ১২টি প্লট রয়েছে আশ্রম প্রাঙ্গণে। ১৯৩১-৩২ এবং ১৯৬১ সালে পূর্বপল্লি, দক্ষিণপল্লির প্লটগুলি সেই সময় বিশ্বভারতী সোসাইটির আজীবন সদস্য, সমাজের বিখ্যাত ব্যক্তিদের এবং বিশ্বভারতীতে কর্মরত অধ্যাপক, কর্মীদের ৯৯ বছরের লিজ দেওয়া হয়েছিল। তারপর থেকে এই প্লটগুলিতে সেই অধ্যাপক, কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা বসবাস করছে।
[ আরও পড়ুন: করোনায় মৃত সন্দেহে শ্মশানে দাহকাজে বাধা স্থানীয়দের, মাঝরাতে তুমুল উত্তেজনা ভাটপাড়ায় ]
নিয়ম অনুসারে এলআর রেকর্ড তৈরির সময় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ভূমি দপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ না করায় এই প্লটগুলি বিশ্বভারতীর হলেও যাঁরা বসবাস করছেন তাঁদের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। আর এই সুযোগ নিয়ে বিশ্বভারতীর বিরুদ্ধে এর মধ্যে পূর্বপল্লি, দক্ষিণপল্লিতে একাধিক প্লট বেআইনিভাবে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এমনকী কিছু দিন আগে মেলার মাঠের কাছে একটি প্লট এক ব্যবসায়ীকে বিক্রি করে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। পরে সেই ব্যবসায়ী ঠিক করেন সেখানে স্কুল করবেন, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তা জানতে পেরে আইনি ব্যবস্থা নেয়।
ভূমি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বপল্লিতে পদ্মভবন, আশ্রম এলাকায় একাধিক প্লট রয়েছে যা বিশ্বভারতীর নামে রেকর্ড নেই। আশ্রম প্রাঙ্গণের প্লটগুলি ১৯১৪ সালের মাঝামাঝি কেনা হয়েছিল। এদিকে রেকর্ডে না থাকা প্লটগুলি রেকর্ড করার কাজ গত দশ বছর ধরে শুরু করেছে বিশ্বভারতী। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্য হয়ে আসার পরে তা দ্রুত গতিতে শুরু হয়েছে। গত কয়েক বছরে শ্রীনিকেতনে ১০ একর জমি, ভূবনডাঙায় ৫ বিঘার বেশি জমি, মোলডাঙায় ৫ একর, আনন্দসদন হস্টেল বিশ্বভারতীর নামে রেকর্ড করা হয়েছে। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর মুখপত্র অনির্বাণ সরকার কিছু বলতে অস্বীকার করেন।
[ আরও পড়ুন: ঘরে ফিরলেন কফিনবন্দি রাজেশ ওরাং, শোকে ভেঙে পড়ল মহম্মদবাজারের গ্রাম ]
The post জমি বিতর্কে বিশ্বভারতী, উপাচার্যের বাংলো-সহ একাধিক প্লটের রেকর্ড নিয়ে প্রশ্ন appeared first on Sangbad Pratidin.