সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সঞ্জয় লীলা বনশালির ‘হীরামাণ্ডি’ (Heeramandi) নিয়ে চর্চার অন্ত নেই। ‘লাহোর বলে লখনউ দেখালেন, কোনও রিসার্চ নেই!’ বলে যখন ক্ষোভে ফুঁসছে পাকিস্তান, তখন নিজের দেশেও সিরিজ মেকিং নিয়ে চর্চার মুখে পড়তে হচ্ছে বলিপাড়ার 'পারফেকশনিস্ট' প্রযোজক-পরিচালককে। এবার 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী (Vivek Agnihotri) 'হীরামাণ্ডি' নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন। তাঁর প্রশ্ন, "গণিকা, বেশ্যালয়ের কাহিনিকে এত মহিমান্বিত করে দেখানোর কী আছে?"
পাকিস্তানি দর্শকদের সুরেই বনশালির (Sanjay Leela Bhansali) বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী। তাঁর কথায়, "আমি সিরিজটা দেখিনি তবে লাহোরের 'হীরামাণ্ডি'তে গিয়েছি বেশ কয়েকবার। পতিতাপল্লীর গণিকাদের রোমান্টাসাইজ করার একটা প্রবণতা চিরকাল বলিউডের রয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক। কারণ পতিতালয়গুলো কখনই এত ঐশ্বর্য, গ্ল্যামারে পরিপূর্ণ ছিল না। এই জায়গাগুলো মানুষের বেদনা ও অন্যায়ের স্মৃতিচিহ্ন। যাঁরা জানেন না এইসম্পর্কে, তাঁরা শ্যাম বেনেগালের 'মান্ডি' দেখুন। এছাড়াও আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে। শিল্পীর সৃজনশীলতা কি কখনও মানুষের দুঃখকষ্টকে গ্ল্যামারাইজ করার স্বাধীনতা দেয়? বসতির চালচিত্রকে এত প্রাচুর্যে ভরা দেখিয়ে একটা সিনেমা বানানো উচিত? দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা বসতির বাসিন্দাদের কি আম্বানিদের বিয়ের অনুষ্ঠানের সাজপোশাকে দেখানো উচিত?" প্রশ্ন রেখেছেন বিবেক অগ্নিহোত্রী।'
[আরও পড়ুন: ‘নেপো প্রোডাক্ট’, মামা বনশালির ‘হীরামাণ্ডি’র জন্য দিনরাত খোঁটা খেয়ে বড় সিদ্ধান্ত ‘আলমজেবে’র]
পাক দর্শকদের একাংশও দাবি করেছিলেন, এত কোটি কোটি টাকা খরচ হয়েছে, কিন্তু কোনও গবেষণা নেই লাহোরের ‘হীরামাণ্ডি’ নিয়ে। এই সিরিজ আসলে ১৯৪০ সালের লাহোরের বারবনিতাদের প্রেক্ষাপট নিয়ে তৈরি। কতটা দাপুটে ছিলেন সেখানকার গণিকারা? কিংবা ব্রিটিশদের সঙ্গে ওঠাবসা করা জাঁদরেল নবাবদেরকেই বা কীভাবে বশে রাখতেন সেই ‘ডায়মন্ড বাজারের’ নারীরা? সেইসমস্ত গল্পই ‘হীরামাণ্ডি’তে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন বনশালি। কিন্তু পাক দর্শকরা বলছেন, ‘এই জাঁকজমকপূর্ণ সেটের সঙ্গে লাহোরের সেই জনপ্রিয় বারবনিতা গলির কোনও সাদৃশ্য নেই। পিরিয়ডিক একটা ড্রামায় ইতিহাসের এত গড়মিল!’ এমনকী তৎকালীন সময়কেও ভুলভাবে তুলে ধরার অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। 'দ্য কাশ্মীর ফাইলস' পরিচালকও সেই অভিযোগ তুললেন বনশালির বিরুদ্ধে।
বিবেকের বরাবরই বিতর্কের শিরোনামে থাকার রেওয়াজ রয়েছে। 'হীরামাণ্ডি' দেখেও তিনি বনশালিকে খোঁচা দিলেন। ঠিক যেমনটা বলিউডের খান সাম্রাজ্য বরাবর তাঁর নিশানায় থাকে। সঞ্জয় লীলার বনশালির ১৪ বছরের স্বপ্ন। তিল তিল করে নিজে হাতে ‘হীরামাণ্ডি’কে গড়ে তুলেছেন। কোনওরকম কসরত বাকি রাখেননি পরিচালক-প্রযোজক। কারণ, বনশালি মানেই ‘লার্জার দ্যন লাইফ’ সেট, সাজপোশাক। পয়লা মে মুক্তির পর থেকেই চর্চার শিরোনামে তাঁর ডেবিউ সিরিজ। সিনেসমালোকদের মার্কশিটে ঝকঝকে নম্বর পেলেও দর্শকদের মধ্য মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে।