সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেলা বাড়তেই মৃত্যুমিছিল বাড়ছে বিশাখাপত্তনমের গোপালপত্তনমে। রাসায়নিক কারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত গ্যাসের ছোবলে বহু মানুষ। হাসপাতালে কাতারে কাতারে অসুস্থ মানুষের ভিড় বাড়ছে। পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার সকালে ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার স্মৃতি ফিরে এলে আচমকা। লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। স্থানীয় মানুষদের উদ্ধারকার্যে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল।
গোটা ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উদ্বেগ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, ‘বিশাখাপত্তনমের ঘটনা উদ্বেগজনক। বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সঙ্গে কথা হয়েছে মন্ত্রকের। তারা উদ্ধারকাজে নেমেছে। পুরো বিষয়টির উপর নজর রেখেছে কেন্দ্র।’ জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রোড্ডি ভাইজাগের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন এবং সেখানে কিং জর্জ হাসপাতালে অসুস্থদের দেখতে যাবেন। দুর্গতদের সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেও গভীর শোক জ্ঞাপন করা হয়েছে মৃতদের উদ্দেশে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইট করে জানিয়েছে, অসুস্থদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন তিনি। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন মোদি।
[আরও পড়ুন: সাতসকালে ফিরল ভোপালের স্মৃতি, বিশাখাপত্তনমে বিষাক্ত গ্যাস দুর্ঘটনায় শিশু-সহ মৃত অন্তত ৭]
অন্ধ্র পুলিশের ডিজি ডিজি সাওয়াং জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একটি শিশুও রয়েছে। বিষাক্ত গ্যাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে পালানোর সময় একজন কুয়োয় পড়ে মারা যান। লকডাউনের জেরে ওই কারখানাটি বন্ধ ছিল। কীভাবে গ্যাস লিক হল তার তদন্ত হচ্ছে। এলজি পলিমার্সের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও। তিনি টুইট করে জানিয়েছেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। আমি স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছি যাতে, দুর্গতদের সবরকম সাহায্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়। মৃতদের পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।’
কীভাবে হল এই দুর্ঘটনা? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশাখাপত্তনমের নায়ডু থোটা এলাকার আরআরভি পুরমে অবস্থিত এলজি পলিমার্স সংস্থার রাসায়নিক কারখানায় বৃহস্পতিবার গভীর রাত ২.৩০ নাগাদ হয় এই দুর্ঘটনা। আচমকা বিষাক্ত গ্যাস লিক করে কারখানা থেকে। ২ হাজার মেট্রিক টনের একটি ট্যাঙ্ক থেকে গ্যাস লিক করে। প্রায় ২০০০ মানুষ এই গ্যাস লিকের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। গ্যাস দুর্ঘটনার পরপরই এলাকা খালি করে দেয় পুলিশ। তিন হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। উৎসস্থল থেকে আড়াই কিমি এলাকা জুড়ে এই গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: খিদের জ্বালায় নাজেহাল, চলন্ত ট্রেনে খাবার নিয়ে মারামারি পরিযায়ী শ্রমিকদের]
গ্রেটার বিশাখাপত্তনম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের তরফে এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয়েছে। লকডাউনের মধ্যে কীভাবে গ্যাস লিক হল তা নিয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। কারখানায় লকডাউনের নিয়ম ভেঙে কাজ হচ্ছিল কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংস্থার নামে নোটিস জারি করা হয়েছে।
The post লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা, ভাইজাগ গ্যাস দুর্ঘটনা কাণ্ডে জরুরি বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী appeared first on Sangbad Pratidin.