সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফৌজদারি আইনে পরিবর্তনের জন্য দণ্ড সংহিতার তিনটি বিল প্রত্যাহার করে মঙ্গলবার লোকসভায় নতুনভাবে বিল পেশ করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলগুলো পেশ করে শাহ বলেন, “সংসদীয় প্যানেল বিলে কয়েকটি সংশোধন করার সুপারিশ করেছিল। সরকার সংশোধনের রাস্তায় না গিয়ে একেবারে পরিবর্তন করে নতুন বিল এনেছে।” যেহেতু দণ্ড সংহিতার তিনটি বিল নতুনভাবে পেশ করা হয়েছে, তাই সেগুলো যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে বিবেচনার জন্য পাঠানোর দাবি তুলেছিলেন কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী।
তা কার্যত খারিজ করে দিয়ে শাহ বলেন, “বিলগুলোতে মুখ্যত পাঁচটি খণ্ডে সংশোধন করা হয়েছে। অধিকাংশ সংশোধনই ভাষা এবং ব্যাকরণ সংক্রান্ত।” বিলের উপর বৃহস্পতিবার আলোচনার পরে শুক্রবার ভোটাভুটি হবে বলেও লোকসভায় উল্লেখ করেছেন শাহ। বিলগুলোর উপর আলোচনার জন্য লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা ১২ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ করেছেন। কিন্তু এত স্বল্প সময়ে গুরুত্বপূর্ণ এই বিল নিয়ে আলোচনা সম্ভব কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাশাপাশি, বিরোধীদের আপত্তি উপেক্ষা করে দণ্ডসংহিতা বিল পাসে কেন্দ্র এত তাড়াহুড়ো করছে কেন, তা নিয়েও সন্দিহান নানা মহল।
[আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চে খারিজ দ্রুত শুনানির আর্জি, প্রধান বিচারপতির দ্বারস্থ মহুয়া]
প্রসঙ্গত, চলতি বছরেই সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষদিনে ফৌজদারি আইনের পরিবর্তে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা ও ভারতীয় সাক্ষ্য বিল পেশ করেছিলেন শাহ। তার পরেই বিলগুলোকে সংসদের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির কাছে আলোচনার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কমিটির বৈঠকে শাসক-বিরোধী সংঘাতও তুঙ্গে উঠেছিল সেই সময়ে। কেন্দ্র সরকার বিলগুলো নিয়ে তাড়াহুড়ো করছে, উপযুক্ত বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়নি বলে সরব হয়েছিলেন কমিটিতে থাকা ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। বিলগুলো নিয়ে ‘ডিসেন্ট নোট’ বা ‘আপত্তি পত্র’ ও জমা দিয়েছিলেন তাঁরা।
দণ্ডসংহিতা বিলে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনকে আরও কড়া ভাবে নতুন মোড়কে নিয়ে আসা হয়েছে বলে ইন্ডিয়া জোটের পক্ষ থেকে অভিযোগও উঠেছে। আবার কমিটির চেয়ারম্যান ব্রিজলাল সমকামিতা ও ব্যভিচারকে অপরাধের আওতায় রাখার সুপারিশ করলেও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ইচ্ছাতে তা হচ্ছে না বলেই জানা গিয়েছে। একইভাবে বিরোধীরা নতুন বিলে মৃত্যুদণ্ড তুলে দেওয়ার জন্য কমিটির বৈঠকে সওয়াল করলেও সরকারপক্ষ তাতে রাজি হয়নি।