ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ”কাজ করতে চাই, তাতে বাধা পেলেই কষ্ট পাই, মনে ক্ষোভ জমে। ব্যক্তিগত স্বার্থে নয়, দলের মঙ্গলের জন্য কথা বলি। দল মানুষের সঙ্গে থাকুক, ভুল থাকলে মিটিয়ে নিক।” শনিবারের বারবেলায় নরমে-গরমে দলের প্রতি এমনই একাধিক বার্তা দিয়ে গেলেন রাজ্যের বনমন্ত্রী, সম্প্রতি খানিক ‘বেসুরো’ তৃণমূল (TMC) বিধায়ক রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee)।
তৃণমূলেই থাকছেন নাকি দূরত্ব বাড়িয়ে দলত্যাগ করছেন? জনগণের মনে উসকে ওঠা এই প্রশ্নের উত্তরও সুকৌশলে দিলেন তিনি। বললেন, ”এখনও ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। ধৈর্য ধরে আছি, ধৈর্যের পরীক্ষা দিচ্ছি।” প্রায় আধঘণ্টার ফেসবুক লাইভে অনেকগুলো বার্তা একসঙ্গে দিয়ে গেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তা নিয়ে নতুন করে আলোচনার অবকাশ তৈরি হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
[আরও পড়ুন: ফের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে অগ্নিকাণ্ড, কেষ্টপুরে পুড়ল পরপর ৬ টি বাড়ি]
পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, শনিবার দুপুর ৩টের কিছু পরই ফেসবুকে লাইভে বসেন রাজ্যের বনমন্ত্রী। প্রথমে বেকারত্ব সমস্যার সমাধানে নিজের উদ্যোগের কথা জানান সকলকে। যুব সম্প্রদায়ের প্রতি জনপ্রতিনিধি হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালনের কথা বলেন। বিনামূল্যে তাঁদের জন্য কোচিং এবং ট্রেনিং সেন্টার খুলে পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ”যুব সমাজকে দিশা দেখানোর চেষ্টা করেছি। যুব সমাজ চাইছে, কেউ তাদের পথ দেখাক। বাংলার জন্য আইটি সেক্টর শিল্প করা যায়। রাজ্যে কাজের পরিবেশ তৈরি করা যায়। এখানে যখন দেখি চাকরি নেই, পড়াশোনা হচ্ছে না, বাইরে চলে যাচ্ছে সবাই, খারাপ লাগে। এখানে মেধা আছে,কিন্তু সুযোগ নেই।”
এসবের পর তিনি দলের প্রতি নিজের ভাবনার কথা বলতে শুরু করেন। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”কাজ করলেই সমালোচনা হবে। প্রতিবন্ধকতা আসবে। কিন্তু ভাল কাজ করার মানসিকতা থাকলে কেউ সরাতে পারবে না।” পাশাপাশি দলের একাংশের প্রতি কিছুটা ক্ষোভপ্রকাশ করে তাঁর বক্তব্য, ”দলনেত্রীও কাজের কথাই বলেন। কিন্তু যখন কাজ করতে গিয়ে বাধা পাই, তখন খারাপ লাগে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষের জন্য কাজ করতে হবে। দুঃখ লাগে যে, কতিপয় নেতা আছে, যখন দিশা দেখাতে চাইছি তখন তারা সেটাকে সমালোচনা করছে।”
[আরও পড়ুন: খুনে হাতিয়ার প্রেশার কুকার? বউবাজারে বৃদ্ধ হত্যায় নয়া মোড়]
তবে তাঁর নানা কথার মাঝে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ এই যে তিনি এখনও ধৈর্য ধরে রয়েছেন, ধৈর্যচ্যুতি ঘটেনি। এই বার্তা যে কীসের ইঙ্গিত, তা বুঝতে বাকি নেই কারও। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত, ঘুরিয়ে তৃণমূলের প্রতিই তাঁর এই মন্তব্য। পাশাপাশি জিইয়ে রাখলেন দলবদলের জল্পনাও। ধৈর্যচ্যুতি ঘটে গেলে যে সেই সিদ্ধান্ত নেবেন না, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই রাজীবের বক্তব্যে।