অর্ণব আইচ: এখনও খোঁজ মেলেনি ওয়াটগঞ্জের গৃহবধূর পেট থেকে নিম্নাঙ্গের দেহাংশ। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই দেহাংশ সুইং ব্রিজ এবং দইঘাটের মাঝের কোনও জায়গায় ফেলা হয়েছে। কোন পথে দেহাংশ পাচার করা হয়েছে, সেই রুটম্যাপ তৈরি করতে মরিয়া তদন্তকারীরা। মিসিং লিঙ্ক খতিয়ে দেখতে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তাঁর বাড়ির ঠাকুরঘর থেকে আশেপাশের এলাকায় ঘুরে নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন ফরেন্সিক আধিকারিকরা।
শুক্রবার তদন্তকারীরা প্রথমে ওয়াটগঞ্জের বধূর বাড়িতে যান। যে বাড়িতে তাঁর দেহ কাটা হয়েছিল, সেখানে ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা। পুজোর ঘরেও যান। যেখানে দেহাংশ উদ্ধার করা হয়, ওই জায়গাটিও ঘুরে দেখে ফরেন্সিক টিম। দেহ কাটার ক্ষেত্রে দা বা কাটারি ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এদিকে, খুনের ঘটনার মিসিং লিঙ্ক খুঁজতে বার বার জেরা করা হচ্ছে বধূর ভাসুর নীলাঞ্জনকে। তদন্তকারীদের দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করছেন না তিনি। বার বারই বলছেন, "আমি কিছু জানি না।" এছাড়া বয়ান বদলে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টাও তিনি করছে বলেই দাবি পুলিশের।
[আরও পড়ুন: স্কুলছাত্রীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ‘গণধর্ষণ’, গ্রেপ্তার বীরভূমের ৫ যুবক]
এদিকে, ইতিমধ্যেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, বেকার নীলাঞ্জন তন্ত্রসাধনা করেই দিন কাটাত। বাড়ির ‘কর্তা’ হিসাবে সারাদিন দুর্গাকে দিয়ে সব কাজ করাত। তার উপর জানালা বন্ধ করে চলত অত্যাচার। প্রতিবেশীরা শুনতে পেতেন দুর্গার কান্না। সোমবার দুর্গার স্বামী টাকা চুরি করে পালানোর পর বাপের বাড়িতে যান দুর্গা। তাঁর ভাই রাত দশটা নাগাদ বাইকে করে দিদিকে পশ্চিম বন্দরে বাপের বাড়ি থেকে ওয়াটগঞ্জে শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে দেন। টাকা ফেরত দিলেও অত্যাচারের পর চলে হুমকি, পাল্টা হুমকি। খুনের ছক কষেই দুর্গার ছেলে ও পরিবারের সবাইকে রাতের খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মেশায় নীলাঞ্জন। অন্যরা অজ্ঞান হওয়ার পর রাত দু’টোর পর দুর্গাকে জোর করে মদ্যপান করিয়ে গলা কেটে খুন করা হয়। আগে থেকেই জড়ো করা ছিল অস্ত্র। তবে তাঁর পেট থেকে নিম্নাঙ্গের দেহাংশ এখনও পাওয়া যায়নি। তা খুঁজতে মরিয়া তদন্তকারীরা।