সন্দীপ চক্রবর্তী: এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ এর দাপট একটা সময়ে ছিল বটে। কিন্তু কর্মপ্রার্থীদের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন সেই কার্ডের অস্তিত্ব কিঞ্চিৎ থাকলেও, গুরুত্ব প্রায় নেই। তৈরি হয় এমপ্লয়মেন্ট ব্যাঙ্ক। তবে এক্সচেঞ্জের ধারণাকে পুরোপুরি অবলুপ্ত করা হয়নি। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের মাধ্যমে বিভিন্ন চাকরিপ্রার্থীর তথ্য তুলে আবেদন করতে পারবেন। চাকরিদাতা কোনও সংস্থা সেই তথ্য জেনে সুবিধামতো নিয়োগ করতে পারবেন। কিন্তু তার ফলেও যে বেকারদের পুরোপুরি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা গিয়েছে এমনটা নয়। সেই কারণেই চালু করা হয় ‘যুবশ্রী’ প্রকল্প।
সাত বছর আগে চালু হওয়া এই প্রকল্পে আবেদনের পর তালিকার ভিত্তিতে যুবশ্রীতে মাসিক দেড় হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে এই মাসিক ভাতা আপাতত এক লক্ষ কর্মপ্রার্থীকে দেওয়া হচ্ছে। ২০১২ সালের জুলাই মাসে চালু হয়েছিল এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক আর ২০১৩ সালে ‘যুবশ্রী’। যাঁদের ভাতা দেওয়া হয় না তাঁদের অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়। কোনও ব্যক্তি চাকরি পেলে সরে যান ব্যাংক থেকে। গত কয়েক বছরে প্রায় এক লক্ষ আটশোর মতো কর্মপ্রার্থী নথিভুক্ত সংস্থার মাধ্যমে চাকরি পেয়েছেন বলে নবান্নের দাবি।
[আরও পড়ুন : লাগাতার ব্যক্তিগত আক্রমণ, সভায় হামলার চেষ্টা! তৃণমূলের বিরুদ্ধে কমিশনে রাজীব]
তৃণমূল পরিচালিত সরকার এমন দাবি করলেও বিরোধী দল রাজ্যে কর্মসংস্থান কমেছে বলে পালটা আক্রমণ শানিয়েছে। যুবশ্রীর মতো ভাতা দানের প্রকল্পের বদলে কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ বা শিল্প আনা অনেক বেশি জরুরি বলেও মত। এছাড়াও যুবশ্রী প্রকল্পে বিভিন্নভাবে স্বজন পোষণের অভিযোগও রয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য স্পষ্ট করা হয়েছে, সবটাই অনলাইনের মাধ্যমে ও পোর্টালে হয়ে থাকে, ফলে কোনও অসৎ উপায়ের প্রশ্ন থাকে না। বিজেপি বার বার বলছে, এমন প্রকল্প কিছু নিজের লোককে টাকা পাইয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছু নয়।
বেকারদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি প্রতি ভোটে সব দলের ইস্তাহারে থাকেই। আমাদের মতো জনবহুল ও পরিকাঠামোহীন দেশে সেটা স্বাভাবিক। তাই কর্মসংস্থান বরাবরই ভোটের ইস্যু। যুবশ্রী সেই কর্মসংস্থানের চাহিদা কতটা পূরণ বা ফাঁক ভরাট করেছে সেটা ভোটের বাক্সে প্রতিফলন ঘটবে, এ নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থাকবে না।