সৈকত মাইতি, তমলুক: বাংলায় বিধানসভা ভোটে (WB Assembly Polls 2021) দলের হার নিয়ে আড়াই মাস পরও যখন পর্যালোচনায় দ্বিধাবিভক্ত গেরুয়া শিবির, ঠিক তখনই ভরাডুবি নিয়ে বিস্ফোরক রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর সাফ কথা, “অনেকেই রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ১৭০-১৮০ টা তো হয়েই যাবে ভেবে আত্মতুষ্টিতে ভুগেছেন। নিজেদের প্রার্থীদের সম্পর্কেই খারাপ কথা বলেছেন। আর এভাবেই অনেকে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রাভঙ্গ করেছেন।” পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে রবিবার নন্দকুমার ৩ মণ্ডলের সভায় ওই মন্তব্য করার পাশাপাশি সদ্য বিজেপি (BJP)ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া মুকুল রায়কেও একহাত নেন শুভেন্দু। বলেন, “মুকুলবাবু এর আগে কোনও ভোটে জেতেননি। কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে লোকসভাতেই বিজেপির লিড ছিল ৫০ হাজার। ওই আসনে আমাদের মুরলীধর সেন লেনের অফিসে সহায়কের কাজ করেন, এমন কাউকে দাঁড় করালেও তিনি ৫০ হাজার ভোটেই জিততেন। তাঁকে সিনিয়র লিডারের মর্যাদা দিয়ে বিজেপি দাঁড় করিয়েছিল, ছেলের ব্যবসা বাঁচাতে তিনি তৃণমূলে গেলে আপনাদের কী?”
এই মন্তব্যের সূত্র ধরেই নন্দীগ্রামের (Nandigram) বিধায়কের পরামর্শ, “এই যে টিভিতে দেখায় এ গেল, সে গেল, তা নিয়ে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।” চণ্ডীপুরের সভায় এদিন শুভেন্দুর ভাষণে আগাগোড়াই ছিল বিধানসভা ভোটে হারের প্রেক্ষিতে আত্মসমালোচনার সুর। পূর্ব মেদিনীপুরের প্রসঙ্গ টেনেই তিনি বলেন, “অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন খেজুরি, নন্দীগ্রাম, ভগবানপুর, নন্দকুমারে জিতেই গিয়েছি। কাজেই চণ্ডীপুর হারলে হারুক। আত্মতুষ্টির এই মনোভাবের জন্যই পরাজয় ঘটেছে।” এই পরিস্থিতিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার ডাক দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, “ভারতমাতার সন্তান হিসাবে বিজেপি করতে হলে, পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশ টু হওয়া থেকে বাঁচাতে গেলে দলীয় পতাকাটাকে আঁকড়ে ধরতে হবে।”
[আরও পড়ুন: Purulia: ডুমুর গাছে অজগর, লেজ-মুখ টেনে উত্যক্তের অভিযোগ]
ভোটের বিশ্লেষণ মেলে ধরে বিরোধী দলনেতা এদিন আরও বলেন, “যে ভোট আমরা পেয়েছি, তার ৮০ শতাংশ আমাদের আদর্শগত ভোট। যা কোনওভাবেই অন্য কারও ভোট নয়। কাজেই কে গেল, আমাদের বয়েই গেল। কিচ্ছু চিন্তা করার নেই।” বিজেপির ঝুলিতে আসা বাকি ভোট প্রতিষ্ঠান বিরোধী অর্থাৎ চাকরি না পাওয়া বেকারদের ভোট বলে তিনি মন্তব্য করেন। শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও এদিনের কার্যকারিণী সভায় উপস্থিত ছিলেন চণ্ডীপুর মণ্ডল ১ এর সভাপতি সুমন রায়, তমলুক সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক পুলক কান্তি গুড়িয়া প্রমুখ।
Advertisement