বিক্রম রায়, কোচবিহার: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের চতুর্থ দফায় শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান চার জন। এই ঘটনার জেরে নির্বাচন কমিশন নির্দেশ দিয়েছিল, কোচবিহারের নয় বিধানসভা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন না রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা। ৭২ ঘণ্টার সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গিয়েছে গতকালই। আর নির্বাচন কমিশনের সেই নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বুধবার মাথাভাঙায় এলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC leader Mamata Banerjee)। শীতলকুচির গুলিকাণ্ডে নিহতদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তাঁদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি এই ঘটনার প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মাথাভাঙা হাসপাতালের পাশের মাঠে পৌঁছন তৃণমূল নেত্রী। সেখানে হাজির ছিলেন শীতলকুচির ১২৬ নম্বর বুথে নিহত চার জনের পরিবারের সদস্যরা। প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেন তিনি। আপনজনের মতো তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন, খোঁজ নেন পরিবারের প্রত্যেকের। একেবারে তাঁদের ঘরের মেয়ে হয়ে ওঠেন মমতা। সেই মঞ্চ থেকেই মমতার ঘোষণা, “ক্ষমতায় এলে নিজে এই ঘটনার তদন্ত করাব। যাঁরা প্রকৃত দোষী তাদের শাস্তি হবে।” পাশাপাশি তৃণমূল ক্ষমতায় এলে নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন বলেও আশ্বাস দেন মমতা। এর আগে নিহত ও আহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। এদিন তাঁর আক্ষেপ, “আমি আরও আগে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কমিশনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমি আসতে পারিনি।”
[আরও পড়ুন : দার্জিলিংয়ের চিড়িয়াখানায় নতুন অতিথি, ৩ ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দিল স্নো লেপার্ড]়
এদিন মাথাভাঙার ওই মাঠে শীতলকুচি গুলিকাণ্ডে নিহত চারজনের পরিবারের সদস্যরাই হাজির ছিলেন। প্রয়াত আনন্দ বর্মনের দাদু ক্ষীতিশচন্দ্র রায়ও উপস্থিত ছিলেন সভায়। তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে বারবার উঠে এসেছে আনন্দ বর্মনের কথা। তাঁর কথায়, “এখানে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁরা সকলেই রাজবংশী। তাঁদের মধ্যে ভেদাভেদ করা উচিত নয়।” পাঁচটি শহিদ বেদি তৈরির নির্দেশও দেন মমতা। জানান, ভোট মিটলে তিনি নিজে এসে ওই বেদির উদ্বোধন করবেন।একইসঙ্গে অভিভাবকের মতো এলাকার মানুষজনকে সতর্কও করেন তৃণমূল নেত্রী। এলাকাবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, “নির্বাচন চলছে।আপনারা সতর্ক থাকুন। কোনও প্ররোচনায় পা দেবেন না।”