স্টাফ রিপোর্টার: বিধানসভায় গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগ বিতর্কের জেরে রাজভবনে ভিনরাজ্যের বাসিন্দারা কীভাবে কতজন চাকরি পেলেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন স্পিকার (WB Assembly speaker) বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নাম না করে বিরোধী দলনেতাকে নিশানা করে স্পিকার বলেন, “গত ক’বছরে রাজভবনে কত লোক, কোথা থেকে এসে চাকরি করছেন, কীভাবে নিয়োগ হয়েছে তা নিয়ে একটু খবরাখবর নিন।”
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র জগদীপ ধনকড়কে (WB Governor Jagdeep Dhankar) কড়া আক্রমণ করে অভিযোগ করেছিলেন, ভিনরাজ্য থেকে নিজের আত্মীয়—পরিজনদের নিয়ে এসে রাজভবনে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করেছেন রাজ্যপাল। ওই সমস্ত নিয়োগ বেআইনি এবং রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকেই ভিন রাজ্য থেকে আসা রাজ্যপালের আত্মীয়দের মাসিক বেতন ও অন্যান্য খরচ বহন করতে হচ্ছে বলেও মহুয়া তোপ দাগেন।
বিধানসভায় নানা অযৌক্তিক ইস্যু তুলে স্পিকারের আইনি জবাবে নাস্তানাবুদ হওয়া বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) এবার সরাসরি বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এদিন বেআইনি নিয়োগে মদত দেওয়ার অভিযোগ করলেন। বিধানসভায় গ্রুপ—ডি কর্মী হিসাবে তৃণমূলের ক্যাডারদের ‘ওয়াচম্যান’ পদে নিয়োগ করা হয়েছে বলে এদিন অভিযোগ করেন শুভেন্দু। বলেন,“ভিন রাজ্য থেকে জাল মার্কশিট এনে বিধানসভায় বেআইনি নিয়োগ হয়েছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ২৪ পরগনার লোকও আছে। অন্তত ১৫টি এমন নথি আমার কাছে আছে।” স্পিকারের নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারুইপুর থেকে কয়েকজন গত ক’বছরে বিধানসভায় গ্রুপ-ডি পদে চাকরি পেয়েছে বলে কটাক্ষ করেছেন বিরোধী দলনেতা। বাম জমানায় স্পিকার হাসিম আবদুল হালিমের নির্বাচনী কেন্দ্র আমডাঙা থেকে বহু পার্টিকর্মী বিধানসভায় শূন্যপদে চাকরি পেয়েছেন।
বিরোধী দলনেতার এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “অর্থহীন, বাজে অভিযোগ। বিধানসভায় গ্রুপ—ডি পদে কর্মী নিয়োগ আইন মেনে হয়। প্রতিটি নিয়োগের আগে খুঁটিয়ে পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়, মেডিক্যাল টেস্ট হয়। জাল না আসল মার্কশিট তা খতিয়ে দেখে পুলিশ রিপোর্ট জমা পড়ার পরেই বিধানসভার বিশেষজ্ঞ কমিটি নিয়োগের সুপারিশ করে।” বিধানসভায় বিরোধী দলনেতাদের সহকারীদেরও সরকারি পদে একই পদ্ধতিতে এযাবৎকাল নিয়োগ করা হয়েছে। একবছর সময় অতিক্রান্ত হওয়ায় এবার বর্তমান বিরোধী দলনেতার ‘অ্যাটেনডেন্ট’কেও একইভাবে পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মেডিক্যাল পরীক্ষার পর নিয়োগ করা হবে বলে স্পিকার জানান।
শুভেন্দুর কাছে ১৫ জনের নথি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিমানবাবুর উত্তর, “পুলিশের কাছে জমা দিতে বলুন।” শুভেন্দুর অভিযোগকে দুর্ভাগ্যজনক আখ্যা দিয়ে পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন,“স্পিকারের সঙ্গে যুক্তি, তথ্যে হেরে গিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। বিধানসভার কর্মীদের অপমান করেছেন বিরোধী দলনেতা।”