ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দিনভর বৃষ্টিভেজা আবহাওয়া। কখনও ঝিরিঝিরি, কখনও প্রবল জোরে বর্ষণ। কলকাতার রাস্তা ভিজে। তার মধ্যেই উপনির্বাচনের আগে শেষ রবিবার প্রচারে কার্যত ঝড় তুললেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা ভবানীপুরের প্রার্থী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিজেপিকে লক্ষ্য করে ছুঁড়ে দিলেন আক্রমণের নতুন তির। অসমে (Assam) ‘অনুপ্রবেশকারী’দের উপর পুলিশের নির্বিচার গুলিতে ২ জনের মৃত্যুর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে মমতার আক্রমণ, ”বিজেপি তো ডান্সিং ড্রাগন। অসমে মৃতদেহ উপর উঠে নাচছে। এটা কোনও রাজনৈতিক দলের কাজ? নাকি তাদের শোভা পায়?” রোম সফর বাতিল হওয়ায় ফের বিজেপিকে একহাত নিলেন মমতা।
সিপিএম, কংগ্রেসকে নিয়েও জনতার কাছে বার্তা দিলেন। বললেন, ”ভবানীপুর (Bhabanipur) আমরা চাই পোলটা এবার করুন। ৪০-৫০% এর বেশি ভোট হয় না এখানে, সেটাই দেখে আসছি। কিন্তু এবার সকলে ভোট দিন। বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম জগাই-মাধাই-গদাই। এই কদিন অনেক কিছু করবে। মাথা ঠাণ্ডা রাখুন, ভোটটা দিন।”
[আরও পড়ুন: বিদ্যাসাগরের জন্মবার্ষিকীতে বর্ণপরিচয় বিতর্কে মুখ খুললেন দিলীপ ঘোষ]
আগামী ৩০ তারিখ ভবানীপুরে উপনির্বাচন (Bhabanipur by election)। তার আগে শেষ রবিবারের প্রচার। এই বিধানসভা কেন্দ্রের পদ্মপুকুরে যদুবাবুর বাজারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় একই সঙ্গে সভা করবেন – এই জোড়া প্রচারের দিকে তাই নজর ছিল সকলেরই। বৃষ্টিভেজা দিনেও সেই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময় অভিষেক-মমতা মঞ্চে উপস্থিত হন। অভিষেকের বক্তব্যের পরই বলতে ওঠেন মমতা। শুরুতে তিনি ভবানীপুরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য শুরু করেন। ভবানীপুরকে ‘মিনি ভারতবর্ষ’র সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ”ভবানীপুর ছোটখাটো ভারতবর্ষ। এখানে হিন্দু, শিখ, জৈন, পারসিক, খ্রিস্টান – সবধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করেন। আর এখান থেকেই নতুন লড়াই শুরু হচ্ছে। এবার গোটা ভারতবর্ষের প্রতিটি কোনায় কোনায় পৌঁছে যাব।”
[আরও পড়ুন: BJP রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর প্রথমবার দিল্লি যাচ্ছেন সুকান্ত মজুমদার, শাহ-নাড্ডার সঙ্গে সাক্ষাৎ]
এরপরই বিজেপিকে (BJP) তীব্র আক্রমণ করেন। প্রথমেই এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন ত্রিপুরায় ১৪৪ ধারা জারি এবং মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের কথা। বলেন, ”ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কোর্ট কী করবে? এহেন মন্তব্যের জন্য ডিফেমেশন কেস করতে পারে তাঁর বিরুদ্ধে। আমার কাছে এই ভিডিও এসেছে, আমি আপনাদের দেব। ১৪৪ ধারা দিয়ে অভিষেককে আটকাচ্ছে। আর এখানে বহিরাগতরা এসে উসকাচ্ছে।” নিজের রোম সফরে বিদেশমন্ত্রকের আপত্তির কথা তুলে মমতা বক্তব্য, ”সব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। সেই সম্পর্ক যেন টিকে থাকে। বাংলাকে তাই শান্তি সম্মেলনে ডাকে। আর বলে দেওয়া হয় যাওয়া যাবে না, আনফিট। কে বলে দেবে আনফিট না ফিট?”
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণের মাঝেই মঞ্চে হাজির হন সংগীতশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তী। তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে গান শোনানোর আবদার করেন মমতা। বলেন, ”ও এখানে এসেছে, আমি খুব খুশি। আবার এই সভা থেকে ও কালীঘাটেও যাবে। তবে একটা গান শুনিয়ে যাবে। ওর গান আমার খুব ভাল লাগে।”