ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ভবানীপুরে উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। নিজের ছেড়ে আসা কেন্দ্রে ভোটে জয়ের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাকি কেন্দ্রগুলিতে ভোট করানোর কথা বললেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় (Sovandeb Chattopadhyay)। তাঁর কথায়, “নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ যে তাঁরা ভবানীপুরের ভোট করাচ্ছে। এই ভোটটা দরকার ছিল। তার ফলে সরকার চালানোর প্রয়োজনে যে কাজ মুখ্যমন্ত্রীকে করতে হবে, তা নিরবচ্ছিন্ন থাকবে।”
এই ভবানীপুর (Bhabanipur) থেকে জিতে কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। আবার নিজের ইচ্ছেতেই সেই কেন্দ্র দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জন্য ছেড়ে দিয়েছিলেন। দলও তাঁকে পালটা পুরস্কার দেয়। জানিয়ে দেওয়া হয়, খড়দহ থেকে প্রার্থী করা হবে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে। শনিবার উপনির্বাচন (West Bengal by election) ঘোষণা হওয়ার পর দেখা গেল, খড়দহ আপাতত সেই তালিকায় নেই। অর্থাৎ খড়দহের উপভোট আরও পরে।
[আরও পড়ুন: করোনা টিকা বিক্রিতে অভিযুক্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক! তড়িঘড়ি সাসপেন্ড করল নবান্ন]
এই কেন্দ্র থেকে শোভনদেব ইস্তফা দিয়েছিলেন ২১ মে। অন্যদিকে, ২ মে ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। ফলে ভবানীপুরের উপনির্বাচনের জন্য যেমন ছ’মাস সময় হাতে রয়েছে, খড়দহের জন্য রয়েছে তার থেকেও কম সময়। ফলে অক্টোবরের মধ্যে খড়দহের ভোট করানো প্রয়োজন। তা না হলে মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দিতে হবে শোভনদেবকে। ফলে এই অবস্থায় একপ্রকার অনিশ্চিত হয়ে রয়েছে তাঁর ভবিষ্যৎ। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে শোভনদেববাবু বলছেন, “বাকি কেন্দ্রগুলিতেও ভোট করে নেওয়া যেত বলে আমার মনে হয়।”
ভবানীপুরে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ২৫ হাজারের বেশি ভোটে জিতেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একুশের নির্বাচনে ২৮ হাজার ৭৯১ ভোটে জয়ী হয়েছিলেন শোভনদেব। ৪৮ শতাংশ থেকে ভোট বেড়ে হয়েছিল ৫৮ শতাংশ। অন্যদিকে, বিজেপির ভোট ৩০ থেকে বেড়ে হয়েছিল ৩৫ শতাংশ। কংগ্রেস ও বামের ভোট পরপর দুই নির্বাচনে কমেছে। সেই কেন্দ্র-সহ বাকি চার কেন্দ্রে ইতিমধ্যে তৃণমূল একসঙ্গে ভোট করিয়ে নেওয়ার পক্ষে একাধিকবার কমিশনকে চিঠি দিয়েছে। সঙ্গে ছিল মুর্শিদাবাদের দু’টি কেন্দ্রে সাধারণ নির্বাচনের দাবিও। সব ক’টি কেন্দ্রের করোনা পরিস্থিতি ভাল বলে জানিয়েছিল তৃণমূল। সেই যুক্তির কথাই মনে করিয়েছেন শোভনদেবও। বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের পরিস্থিতি আছে বলেই ভোট ঘোষণা করেছে। যে তিনটিতে ভোট হবে সেই তিনটি ছাড়া বাকি কেন্দ্রগুলিতেও একই অবস্থা। তা হলে সেই কেন্দ্রগুলিতেও ভোট করানো দরকার।”
[আরও পড়ুন: WB By Election: উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা হতেই ‘ঘরের মেয়ে’ মমতার জন্য প্রচার শুরু ভবানীপুরে]
সপ্তাহের অর্ধেক দিন, কখনও আবার তার চেয়েও বেশি সময় খড়দহে গিয়ে প্রচারের কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন শোভনদেব। কিন্তু শনিবার নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় সেই কাজে কিছুটা ছেদ পড়ল বলেই মনে করছে তাঁর ঘনিষ্ঠমহল। দলের তরফ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে বাকি কেন্দ্রগুলির জন্য উপনির্বাচন দাবি করলেও তিনি নিজে অবশ্য তা নিয়ে কিছু করছেন না। আপাতত দলেরই মুখাপেক্ষী রাজ্যের বর্তমান কৃষিমন্ত্রী।