নব্যেন্দু হাজরা: পুজোর মুখে বন্যায় ভাসছে একাধিক জেলা। উত্তর থেকে দক্ষিণের বহু জেলা প্লাবিত। ঘরছাড়া অন্তত কয়েক লক্ষ মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্যের মন্ত্রীদের বিশেষ নির্দেশ দিলেন তিনি। নবান্ন সূত্রে খবর, মন্ত্রীদের পুজোর চেয়ে বেশি বন্যার দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা।
সোমবার নবান্নে ছিল মন্ত্রিসভার বৈঠক। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সেখানে আলোচনা হয় বলে সূত্রের খবর। সেখানেই মন্ত্রীদের বিশেষ নির্দেশ দেন মমতা। স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পুজোর পাশাপাশি বন্যাও গুরুত্বপূর্ণ। যে সমস্ত মন্ত্রীদের এলাকায় বন্যা হয়েছে, সেই সমস্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের পুজোর চেয়ে বেশি বন্যায় নজর দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে তাঁদেরই। আর যে সমস্ত এলাকায় বন্যা হয়নি, সেই সমস্ত এলাকার মন্ত্রীদের বন্যাকবলিত এলাকার জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সংগ্রহ করে পাঠানোর নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মন্ত্রিসভার পাশাপাশি জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেন মমতা। প্রশাসনিক বৈঠক শেষে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি এখন কেমন তা নিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। উৎসবের সময় আসছে। এই সময় প্রশাসনকে আরও সক্রিয় সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। মানুষের পাশে থাকতে বলা হয়েছে। মহালয়ার দিন ভরা কোটাল রয়েছে। যেসব জায়গায় ভরা কোটালের আশঙ্কা রয়েছে সেখানে তিন তারিখ পর্যন্ত সতর্ক থাকতে হবে। পরিস্থিতি বুঝলে আগাম নিরাপদ জায়গায় মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’’ একইসঙ্গে যে সমস্ত এলাকায় বন্যায় মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ত্রাণের কাজ চালিয়ে যেতে হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘প্লাবনের জন্য অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সব এলাকায় বিশেষ করে জামা কাপড় ও খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। যাদের বাড়ি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাদের ন্যূনতম তিনটে করে ত্রিপল দেওয়া হবে, যাতে তারা অস্থায়ীভাবে থাকার জায়গা তৈরি করতে পারে।’’
পাশাপাশি এদিনের বৈঠকে খানাকুল আমতা উদয়নারায়ণপুর ঘাটাল গাইঘাটা গোবরডাঙ্গার মতো এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে ঠিক হয়েছে, জল নামলে চাষের ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখা হবে। চাষের ক্ষয়ক্ষতির জন্য বাংলা শস্য বীমা থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় কৃষকদের। এবছর তার সময়সীমা আরো একমাস বাড়ানো হয়েছে।’’ তবে কেন্দ্রকে এবিষয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে কিনা সেবিষয়ে সরাসরি কিছু জানাননি মুখ্যসচিব। জানান, আগে জল নামলে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে পরে তা বিবেচনা করে দেখা হবে।