ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: পরের ভোটে জোট হলেও দলের প্রতীকে জোর দেওয়া হোক। যেখানে দলের সংগঠন শক্তিশালী, সেখানে বামেদের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে কংগ্রেসই লড়ুক। বৃহস্পতিবার সাগরদিঘির ফল বেরোতেই এই দাবি উঠল প্রদেশ কংগ্রেসে (West Bengal Pradesh Congress)। বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের জয় প্রায় নিশ্চিত হতেই এদিন দেখা যায় লাল জামা গায়ে চড়িয়ে বেরিয়ে পড়েছেন অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। পরের ভোটে সাগরদিঘিকে মডেল করে এগোনোর আহ্বান জানিয়েই দিয়েছেন প্রদেশ সভাপতি। দলীয় নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রদেশ সভাপতি যা সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই চূড়ান্ত। তবে তার আগে দলের প্রতীককে সামনে রেখে সর্বত্র সংগঠন মজবুত করতে হবে। জোট-ভবিষ্যৎ চূড়ান্ত করতে খুব শীঘ্রই দলীয় নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছে প্রদেশ কংগ্রেস।
সাগরদিঘির ফলের রেশ কলকাতার বিধান ভবনেও দেখা যায়। একসঙ্গে লাল আর সবুজ আবির ওড়ে। দলীয় সূত্রে একটি বক্তব্য উঠে এসেছে। সাগরদিঘি আর ত্রিপুরা, একসঙ্গে দুই জায়গাতেই বাম-কংগ্রেস জোট ব্যর্থ হলে জোটের পথ থেকে সরে আসত কংগ্রেস নেতৃত্ব। তবে মুখ রেখেছে সাগরদিঘি। ফলে সেই পথেই দল এগোবে বলে জানাচ্ছে রাজ্য নেতৃত্ব। জোটের পথেই যদি যেতে হয়, সেক্ষেত্রে দলের প্রতীককে সামনে রেখে নির্দিষ্ট অভিমুখে চলার কথা বললেন দলের পঞ্চায়েত নির্বাচন কমিটির চেয়ারম্যান প্রাক্তন বিধায়ক নেপাল মাহাতো (Nepal Mahato)।
[আরও পড়ুন: ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার’, আড়াল থেকেই নিয়োগ দুর্নীতিতে মুখ খুললেন হৈমন্তী]
নেপাল মাহাতো ইতিমধ্যেই দলের প্রতীককে পঞ্চায়েত ভোটে সামনে রেখে লড়াইয়ের কথা বলেছেন। এদিনের ফলাফলের পর তিনি বলছেন, “আবারও বলব দলের প্রতীককে সামনে রাখতে হবে। যেখানে দলের শক্তি আছে, সেখানে কংগ্রেসই (Congress) প্রার্থী দেবে। যেখানে আমাদের শক্তি কম সেখানে সমঝোতা হতেই পারে। তবে লড়াইটা ভাল করে করতে হবে।” একই দাবি এআইসিসি (AICC) সদস্য শুভঙ্কর সরকারের। দ্রুত সাগরদিঘি নীতি চূড়ান্ত করার দাবি তুলে তিনি বলছেন, “অবিলম্বে একটা সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে সেই পথে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য এগোতে হবে। দলের নীতি ঠিক করে এখন থেকেই পরের ধাপ নিয়ে আলোচনায় বসতে হবে। যে রসায়ণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য, তাকে চূড়ান্ত রূপ দিতে হবে।” দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তীর কথায়, “আমরা দ্রুত এ নিয়ে আলোচনায় বসে একটা চূড়ান্ত নীতি নেব।”
[আরও পড়ুন: তৃণমূলের জাতীয় দলের স্বীকৃতি বাতিল হোক, ৩ রাজ্যের ফলের পরই দাবি শুভেন্দুর]
প্রদেশ কংগ্রেসের নেতাদের একটা বড় অংশের দাবি, দল দেখে নিতে চেয়েছিল কোন ভোটে জয় আসে। কোথাকার মানুষ কোন সমীকরণ চাইছে। শুভঙ্করবাবুর আরও বক্তব্য, ত্রিপুরার ক্ষেত্রে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে সামনে রেখেই এগোনো উচিত ছিল বামেদের। শুধু অল্প বয়স দিয়ে ভোটের সমীকরণ টানা যায় না। সাগরদিঘি মডেলকে শুধু পঞ্চায়েত নয়, পুরসভা থেকে লোকসভা, পরের সমস্ত ভোটে প্রয়োগ করার দাবি তুলেছেন দক্ষিণ কলকাতার জেলা সভাপতি প্রদীপ প্রসাদ। কলকাতায় বিজয় মিছিল করার কথাও বলেছেন তিনি।