স্টাফ রিপোর্টার: বাম আমলে চিরকুট সুপারিশে চাকরির তথ্য-তালাশের কাজ শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস। একেবারে এসএসসি-র (SSC) শুরু থেকে, অর্থাৎ ১৯৯৭ সাল থেকে বাম আমলে যত চাকরি হয়েছে, তার কত চাকরি স্রেফ চিরকুট সুপারিশে হয়েছে তার খোঁজ করে দলীয় স্তরে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। শুধু তাই নয়, বাম আমলের প্রাক্তন কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, লোকাল কমিটি বা জোনাল কমিটির ঘনিষ্ঠ থেকে পার্টির হোল টাইমারদের মধ্যে কতজনের বাড়ির লোকের স্কুলে চাকরি হয়েছে, তার তালিকাও তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের শিক্ষা সেল ও কাউন্সিলরদের। এই সমস্ত তালিকা একজোট করে শ্বেতপত্র প্রকাশ করবেন শিক্ষামন্ত্রী।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে যে, নিয়োগ দুর্নীতিতে কারও নাম জড়ালেই তার সঙ্গে গোটা তৃণমূল (TMC) দলকে দাগিয়ে দেওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে। এ নিয়ে কিছুদিন আগেই দলগতভাবে সাংবাদিক বৈঠক করে সরব হয় শাসকদল। বৃহস্পতিবার সেই প্রেক্ষিতের উল্লেখ করেই বাম আমলে নানা সময় যেভাবে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, সেদিকে নির্দেশ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।
[আরও পড়ুন: ‘না জেনে বিকৃত প্রচার চলছে’, সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে পড়ানো বিতর্কে জবাব কুণালের]
তাঁর কথায়, “চিরকুট সিস্টেমের নাম শুনেছেন? এটা আমাদের রাজ্যে বরাবরই ছিল। এখন প্রযুক্তি থাকার কারণে বিষয়টা এত খোলাখুলি হয়েছে আমাদের সময় একটা নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠন না করলে স্কুলে চাকরি পাওয়া যেত না।” নিজের কথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী এরপরই বলেন, “আমি সৌভাগ্যবশত এমএ পাস (MA Pass) করে নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে চাকরি পেয়েছিলাম। আমার বহু বন্ধু আছেন, বহু পরিচিত আছেন যাঁরা ছাত্র সংগঠন করতেন।” তাঁর অভিযোগ, “সে সময় একটি নির্দিষ্ট দলের কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের আত্মীয় কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আত্মীয় বা লোকাল কমিটি বা জোনাল কমিটির সঙ্গে পরিচিত, একাধিক হোলটাইমারের বাড়ির লোকেরা স্কুলের চাকরি পেয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: অপহরণের পর খুন করে তপসিয়ার খালে দেহ! দিল্লি থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার ট্যাংরা থানার পুলিশের]
এই প্রেক্ষিতেই শিক্ষামন্ত্রীর ওই তালিকা তৈরির নির্দেশ। তাঁর কথায়, “দলকে বলেছি, দলের শিক্ষা সেলকেও বলেছি এই তালিকাটা বার করতে। ১৫ বছর আগে যিনি কাউন্সিলর ছিলেন, তাঁর বাড়ির লোকেরা কে কোথায় কী চাকরি পেয়েছেন, তার একটা তালিকা আমি দলে জমা দিতে বলছি। তাহলে পুরোটা মিলিয়ে একটা শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে পারি।”
ব্রাত্য বসুর এই নির্দেশের পর শুক্রবার কালীঘাটে দলের বৈঠকেও একই বক্তব্য ছিল তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Mamata Banerjee)। এদিন তিনি জানান, সমস্ত শিক্ষক সংগঠন দেখবেন ব্রাত্য বসু। ১৯৯০ থেকে ২০১১ সাল অবধি শিক্ষক নিয়োগের অডিট রিপোর্ট চান তিনি। এদিন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও (Kunal Ghosh) টুইট করে বাম আমলের দুর্নীতির তদন্ত চেয়েছেন।